তারেক রহমান জীবন্ত ইতিহাস: মির্জা ফখরুল
২৬ নভেম্বর ২০২৪ ২২:১৭
ঢাকা: তারেক রহমানকে ‘জীবন্ত ইতিহাস’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হোটেল লেকশোরে আয়োজিত ‘তারেক রহমান: পলিটিক্স অ্যান্ড পলিসিস কনটেম্পোরারি বাংলাদেশ’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি প্রায় সবসময় এই কথাটা বলি— ইচ্ছা করলেই, চেষ্টা করলেই কাউকে ম্লান করে দেওয়া যায় না, উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ইতিহাসকে বিকৃত করা যায় না। কিউবার ফিদেল ক্যাস্ট্রো যুদ্ধ করতেন প্রথম দিকে। সেই যুদ্ধের সময় তিনি গ্রেফতার হলেন বাতিস্তার হাতে। গ্রেফতারের পরে তার বিচার হলো। ১২ বছর সাজা হয়েছিল। সেই সময়ে ক্যাস্ট্রো বিচারকদের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন— কনডেম মি, ডাজন্ট ম্যাটার। হিস্ট্রি উইল অ্যাবজরভ মি। আমাকে তোমরা এখন কনডেম করতে পারো, কিন্তু ইতিহাস আমাকে ধারণ করবে।’
‘সেই ইতিহাস ধারণ করেছে জিয়াউর রহমানকে, খালেদা জিয়াকে, তারেক রহমানকে। ইনশাল্লাহ জীবন্ত ইতিহাস তারেক রহমান আমাদের আলোকিত বাংলাদেশের দিকে নিয়ে যাবেন— এই বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। সুদূর প্রবাসে থেকে দলকে সংগঠিত করে এবং দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে তারেক রহমানের নেতৃত্ব প্রশংসার দাবিদার,’— বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘একটি পরিবারের ওপরে কী পরিমাণ অত্যাচার-নির্যাতন হতে পারে, একজন তরুণ সম্ভাবনাময় নেতার ওপরে কীভাবে নির্যাতন হতে পারে, তা এই জিয়া পরিবার ও তারেক রহমানকে না দেখলে আমরা বুঝতে পারব না। তার (তারেক রহমান) ওপরে নিদারুণ নির্যাতন হয়েছে, শারীরিক নির্যাতন হয়েছে, মানসিক নির্যাতন হয়েছে। অথচ তিনি কখনো থেমে যাননি এবং মাথা নত করেননি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা মামলায় বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পরে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং এরই মধ্যে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হলো। তখন বিএনপির নেতৃত্বে কে আসবে, এটা অনেকের মনে চিন্তা ছিল। অনেকে ভাবছিলেন, আমাদের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এই দায়িত্ব নিতে পারবেন কি না। কিন্তু তিনি তার কাজের মধ্য দিয়ে অতি দ্রুত পার্টিকে সংগঠিত করে মহান একটি ছাত্র-জনতার বিপ্লব-অভ্যুত্থান ঘটাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার মধ্যে যে অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা আছে, তার মধ্যে যে অসাধারণ গণতান্ত্রিক মন আছে, আমরা যারা তার সঙ্গে কাজ করছি তারা সবসময় বুঝতে পারি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহআন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংবাদিক শফিক রেহমান, চারুকলা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, গবেষক মোবাশ্বর হোসেন ও শরীফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. মঈন খান ও সালাহ উদ্দিন আহমেদ; ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী; চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুল হালিম ও ইসমাইল জবিহউল্লাহ; সিনিয়র যুগ্ম মহাসিচব রুহুল কবির রিজভী; যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ; কেন্দ্রীয় নেতা মাহবী আমিন, আনোয়ার হোসেন খোকন, সেলিম রেজা, শামা ওবায়েদ ও আফরোজা আব্বাস; এবং বাসস পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীনসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর