Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শ্রমিক দল নেতা পরিচয়ে ডেকে নিয়ে মারধর ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ নভেম্বর ২০২৪ ০১:৫৬

মারধরের শিকার সিএনজি অটোরিকশার চালক আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শ্রমিক দল নেতা পরিচয় দিয়ে এক সিএনজি অটোরিকশার চালককে ডেকে নিয়ে ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে আট ঘণ্টা আটকে রেখে মারধর করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অটোরিকশার চালক মোহাম্মদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে ওই অটোরিকশার চালক থানায় অভিযোগ করেন। সেখানে উল্লেখ করেছেন, সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১১টায় মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকার শাহজালাল হাউজিংয়ের তিন নম্বর রোড থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

মারধরের শিকার ভুক্তভোগী সিএনজি অটোরিকশার চালকের নাম মো. আজাদ (৩৫)। খবর পেয়ে তার ভাই কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে ১৫ হাজার টাকা ধার নিয়ে মুক্তিপণ দিয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, মোহাম্মদপুর তিন রাস্তা মোড়ে গাবতলীমুখী সড়কে মাওয়া ঘাট সিএনজি স্ট্যান্ডের সঙ্গে শ্রমিক দল নেতাদের একটি ক্লাবঘর রয়েছে। শ্রমিক দল নেতা দুলাল, ফজলু, নুর আলমসহ ৮-১০ জনের একটি দল ক্লাবঘরটি নিয়ন্ত্রণ করেন। তারাই আরেক সিএনজিচালকের মাধ্যমে আজাদকে সোমবার সকাল ১১টার দিকে বসিলার শাহজালাল হাউজিং এলাকার ৩ নম্বর রোডের শেষ মাথায় একটি চা দোকানে ডেকে নিয়ে যান।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তাকে সেখানে আটকে রেখে ছিনতাইকারীর আখ্যা দেওয়া হয়। এরপর লোহার রড, লোহার লাঠি ও হকি স্টিক দিয়ে ব্যাপক মারধর করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের ফোন দিয়ে মুক্তিপণ চাইলে আজাদের ছোট ভাই আক্তার হোসেন আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে সুদে ১৫ হাজার টাকা ধার নিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে আজাদকে আহত অবস্থায় ছাড়িয়ে নিয়ে যান।

বিজ্ঞাপন

ভূক্তভোগী মো. আজাদ বলেন, ‘সোমবার সকাল ১১টায় সিএনজি ড্রাইভার মিলনের মাধ্যমে দুলাল, ফজলু ও নুর আলমসহ ৮-১০ জনের একটি দল বসিলার শাহজালাল হাউজিং এসপিবিএনের গলি দিয়ে ৩ নম্বর রোডের শেষ সীমানায় চা দোকানে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর দুলাল ও ফজলু আমাকে আটক করে বলে, তুই ছিনতাইকারী। তুই গ্যাং লিডার। তোরে আজকে মাইরা ফেলব।’

আজাদ বলেন, ‘এ কথা বলে ওদের সাজানো দুইটা লোক এনে বলে, সে তোদের লিডার না? এই বলে আমাকে চা দোকানদারসহ সবাই মিলে এলোপাতাড়ি লোহার রড, লোহার পাইপ ও হকি স্টিক দিয়ে পেটাতে থাকে। সকাল ১১টা থেকে পিটিয়ে আমার কাছে প্রথমে কয়েক লাখ ও সবশেষ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমার ভাইকে ফোন দিয়ে টাকা নিয়ে আসতে বললে সন্ধ্যায় আমার ভাই ধার করে সুদে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।’

আজাদ আরও বলেন, ‘আমাকে দীর্ঘ আট ঘণ্টা ধরে প্রচণ্ড মারধর করেছে। আমি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি। এ বিষয়ে আমি থানায় কিংবা আদালতে আইনি কোনো ব্যবস্থা নিলে ফজলু আমাকে গুম করে ফেলার হুমকিও দেয়। এ ঘটনায় আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানা শ্রমিক দলের সভাপতি আলী কায়সার পিন্টু বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। এ ঘটনায় যারা জড়িত তারা কেউ কোনো ওয়ার্ড, ইউনিট বা থানার শ্রমিদলের রাজনীতিতে যুক্ত না। তারা আগে আওয়ামী লীগ করত। এখন তারা শ্রমিক দলের নাম বিক্রি করে নানা ধরনের অপরাধ করছে। আমি থানার ওসি সাহেবকে ফোন করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলছি।’

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় আমরা দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিয়ে জড়িতদের আটক করব।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

ডেকে নিয়ে মারধর মুক্তিপণ আদায় শ্রমিক দল নেতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর