ম্যানোলা হিল ফের দখলের আশঙ্কা ‘মালিকপক্ষের’
২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দখলমুক্ত হওয়া চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত ‘ম্যানোলা হিল’ ফের দখলের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে এর ‘মালিকপক্ষ’।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ আশঙ্কার কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দুই বছর আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ‘আওয়ামী গডফাদারদের’ মাধ্যমে তাদের উচ্ছেদ করে পাহাড়টি দখলে নিয়েছিলেন। কাজী আকরামসহ আওয়ামী গডফাদাররা পালিয়ে যাওয়ার পর তারা ফের পাহাড়টিতে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু এখন নতুন করে আবার একটি মহল পাহাড়টি দখলের চক্রান্ত শুরু করেছে।
চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্র দামপাড়া এম এম আলী রোডে হাজার কোটি টাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন এ ‘ম্যানোলা হিল’ নিয়ে গত দুই বছরেরও বেশিসময় ধরে দখল, পাল্টা দখল, উচ্ছেদ, পালটা-পালটি সংবাদ সম্মেলনের ঘটনা ঘটে আসছে।
এ অবস্থায় বুধবার দুপুরে ‘ম্যানোলা হিল পরিবার’ ব্যানারে নগরীর একটি রেস্তোঁরায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন সৈয়দ জিয়াদ রহমান ও নুরুল আজিম নামে ‘মালিকপক্ষের’ দুজন।
এতে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ৮ কানি আয়তনের এ পাহাড়ের উত্তরে সৈয়দ জিয়াদ রহমান ৪ কানি এবং দক্ষিণে নুরুল আজিম ৪ কানি জায়গার দখলে আছেন। তারা হোল্ডিং ট্যাক্স, বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের বিল পরিশোধ করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর চট্টগ্রামের কয়েকজন শীর্ষ নেতা বিভিন্ন কলাকৌশলে তাদের কাছ থেকে পাহাড়টি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তারা ব্যর্থ হলে দুই বছর আগে জবরদখল প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ।
‘স্ট্যান্ডার্ড রোজ ভিলা হাউজিং লিমিটেডের’ ব্যানারে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম ২০২২ সালের ২১ জুন বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে ম্যানোলা পাহাড় দখলে নেন।
সৈয়দ জিয়াদ রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গডফাদার মহিউদ্দিন বাচ্চু (সাবেক সাংসদ), দিদারুল আলম মাসুম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন অর্ধশত সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে ম্যানোলা হিলে তাণ্ডব চালায়। আমার ছেলে ও ভাতিজাকে তুলে নিয়ে যায়। আমাদের বাড়ি থেকে শত ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা, ডলার, লাইসেন্স করা তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, দুটি গাড়ি লুট করা হয়। মারধর করে আমাদের কর্মচারীদের আহত করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র- জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর দখলদাররা পালিয়ে যায়। তখন আমরা আবার ম্যানোলা হিলে ফিরে আসি। আমাদের কিছুই অক্ষত ছিল না। এর পর থেকে আমরা গত চারমাস ধরে সেখানে আবার বসবাস করে আসছি।’
সৈয়দ জিয়াদের অভিযোগ, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাজী আকরামের ঘনিষ্ঠ নুরুল ইসলাম আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভূমি ব্যবস্থাপনার চুক্তি করেছেন নুরুল ইসলাম, যেটা তিনি আইনগতভাবে পারেন না।
‘কাজী আকরাম ও নুরুল ইসলাম ম্যানোলা হিলের মালিক নন। আমরা দুই ভাই জায়গার দখলে আছি। আওয়ামী গডফাদাররা পালিয়ে থাকায় নুরুল ইসলাম আবারও সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে ম্যানোলা হিলের দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। আমাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর প্রতিকার চাই,’ – বলেন সৈয়দ জিয়াদ রহমান।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম