চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার ১৪
২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৪০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বী সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি-মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতার ১৪ জনের মধ্যে আটজনের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে। তারা হলেন- রাজিব ভট্টাচার্য্য, রুমিত দাশ, সুমিত দাশ, গগন দাশ, নয়ন দাশ, বিশাল দাশ, আমান দাশ ও মনু মেথর।
এরমধ্যে রাজিবকে বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া আইনজীবী আলিফ হত্যার সময়কার একটি ছবিতেও রাজিবের উপস্থিতি দেখা গেছে। ওই ছবিতে দেশিয় অস্ত্র এবং বটি হাতে কয়েকজন যুবকের পেছনে একটি ইটের টুকরো হাতে দেখা যায় তাকে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি-মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ সারাবাংলাকে জানান, আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে ১৪ জনকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় শনাক্ত করা হয়েছে। বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের সময় আলিফ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে ৩০ জনকে আটক করা হয়। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই শেষে ৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালিয়ে নতুন করে মোট আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নগর পুলিশের উপ কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশের ওপর হামলা, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আইনজীবী খুনের ঘটনায় এখনও কোনো মামলা রুজু করা হয়নি। তবে খুনের ঘটনায় জড়িত এমন কয়েকজনকে আমরা গ্রেফতার করেছি।’
এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা, সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৬০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত ভবনের মূল প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হলের সামনের ঘটনায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া নগরীর কোতোয়ালীর মোড়ের ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন।
সারাবাংলা/আইসি/ইআ