Thursday 28 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শ্রমিক-মালিকসহ সবপক্ষের মতামত নেবে শ্রম সংস্কার কমিশন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৮

রাজধানীর শ্রম ভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা: দেশে শ্রম আইনের সংস্কারে শ্রমিক, মালিক, ট্রেড ইউনিয়নসহ সবপক্ষের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করবে শ্রম সংস্কার কমিশন। সেলক্ষ্যে আগামী দেড় মাস বিভিন্ন অংশীজনের সাথে বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ, পেশাজীবী ও প্রান্তিক শ্রমজীবী গোষ্ঠীর সাথে মতামত বিনিময় করবে কমিটি।

একইসঙ্গে ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই প্রতিবেদন দেবে কমিটি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর শ্রম ভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহম্মদ। সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশন সদস্য ড. মাহফুজুল হক, কামরান তানভিরুর রহমান, তপন দত্ত, ড. জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট এ কে এম নাসিম ও তাসলিমা আখতার। অনলাইনে যুক্ত ছিলেন কমিশনের সদস্য চৌধুরী আশিকুল আলম ও সাকিল আখতার চৌধুরী এবং কমিশনের টেকনিক্যাল গ্রুপের সদস্যরা। বৈঠক শেষ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কমিটির প্রধান।

সভায় কমিশন তার কার্যপদ্ধতি, কাজের পরিধি, অগ্রাধিকার ইস্যু ও প্রতিবেদন প্রস্তুতি বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে। একই সাথে বিভিন্ন ইস্যুতে টেকনিক্যাল টিম এবং সাব-কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রম সংস্কার কমিশন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে সকল বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নে কাজ করবে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— শ্রম আইন সংস্কার, শ্রমসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামোগত সংস্কার, শিল্পসম্পর্ক ও ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থার উন্নয়ন, ট্রেড ইউনিয়ন, সংগঠিত হওয়া ও দরকষাকষির চর্চার পরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি ও বিরোধ নিষ্পত্তি, কর্মসংস্থান ও চাকুরির নিরাপত্তা, মজুরি ও ক্ষতিপূরণের মানদণ্ড, সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণমূলক কার্যক্রম, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়ন, অভিবাসী শ্রমিক সুরক্ষা, শিশুশ্রম নিরসন, শ্রমজীবী কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষা, পিছিয়ে পড়া শ্রমিক যেমন— নারী, কৃষি, গ্রামীণ শ্রমিক, গৃহশ্রমিক, খামারভিত্তিক, মৌসুমি, আদিবাসী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও অনগ্রসর শ্রমজীবী গোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষা ও অন্যান্য।

বিজ্ঞাপন

লিখিত বক্তব্যে শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ‘এতদিন বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশের শস্তা শ্রমকে ব্রান্ডিং করা হয়েছে। উন্নয়নের জরুরি শর্ত হিসেবে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ সীমিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। অথচ সুষ্ঠু শিল্পসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রমের কোনো বিকল্প নেই। শ্রমিক ও মালিক পক্ষ যৌথ দরকষাকষির মাধ্যমে যথাযথ উৎপাদনশীল নিরাপদ কর্মপরিবেশ গড়ে তুলবেন এটাই প্রত্যাশিত। সর্বক্ষেত্রে না হলেও দুঃখজনকভাবে এখানে তৈরি হয়েছে একে অপরকে প্রতিপক্ষ বিবেচনা করার সংস্কৃতি, যা থেকে বেরিয়ে না আসতে পারলে পুরো জাতিকেই এর মাশুল গুনতে হবে।’

তিনি বলেন, উন্নয়নের সুফল যাচ্ছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সুবিধাভোগীদের কাছে, আর শ্রমিকদের জীবনমান দিন দিন আরও নেমে যাচ্ছে। এমন এক সংস্কৃতি চালু হয়েছে যেখানে শ্রমিকদেরকে গণ্য করা হচ্ছে কেবলই উৎপাদনের হাতিয়ার হিসেবে, মানুষ কিংবা নাগরিক হিসেবে নয়। শ্রমিকদের প্রতি এই দৃষ্টিভঙ্গি, এই দূরত্বসুলভ আচরণ আমাদের সবাইকে পরিহার করতে হবে এবং উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে তাদেরকে প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে। সার্বিকভাবে এই দেশে এখনও কোনো ‘জাতীয় ন্যূনতম মজুরি’ ঘোষণা করা হয়নি। মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন আমাদেরকে দেখিয়েছে যে প্রায় ২০০ বছর হয়ে গেলেও অদ্যাবধি শ্রমিকদের মজুরি বা অন্যান্য ইস্যুগুলো এখনও অমীমাংসিতই থেকে গেছে। শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা তাৎক্ষনিক পরিশোধের জন্য জরুরি বিপদকালীন তহবিলও নেই।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এইচআই

পেশাজীবী শ্রম সংস্কার কমিশন শ্রমিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর