চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটি কেন অবৈধ নয়— হাইকোর্টের রুল
২৮ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৪৬
ঢাকা: চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্যদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি ভেঙে দেওয়া এবং জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমসহ তথ্য মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী ৫ ডিসেম্বর রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
এক রিটের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায়ের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আজ আদালতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের পক্ষে অংশ নেন ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ মেজবাহুল আনোয়ার, ব্যারিস্টার হারুনুর রশীদ। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলসহ ডিএজি ও এএজিরা অংশ নেন।
পরে ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বলেন, ‘চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের কমিটি ভেঙে দেওয়া এবং অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে এক সপ্তাহের জন্য রুল জারি করেছেন আদালত। পাশাপাশি এ বিষয়ে আগামী ৫ ডিসেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের নির্বাচন হয় দুই বছর মেয়াদী। সে মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। তার আগেই সম্প্রতি এ কমিটি অবৈধ এবং অন্যায়ভাবে ভেঙে দেওয়া হয়। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কোনো রকম শোকজ ছাড়াই কমিটি ভেঙে দিয়েছেন। যেটা তাদের কোনো জুরিসডিকশনে (আইনে) নেই। সে কমিটি ভেঙে দেওয়ার আদেশের বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে রিট দায়ের করি। এতে সরকার পক্ষ হাজির হয়। শুনানিতে আদালত বলেছেন, এটা আপনারা জুরিসডিকশনের (আইনের) বাইরে করেছেন।’
গত ৩ নভেম্বর কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ উল্লেখ না করেই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের নির্বাচিত ব্যবস্থা কমিটি ভেঙে দেওয়ার আদেশ জারি করেন।
এরপর গত ১৩ নভেম্বর চার সদস্যের একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে জেলা প্রশাসক নিজেই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেন। জেলা প্রশাসকের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দফায় দফায় লিখিতভাবে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি তার নির্দেশ প্রত্যাহার করার কথা বলা হলেও রহস্যজনক কারণে তিনি এতে কর্ণপাত করেননি বলে জানান চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের নির্বাচিত কমিটির নেতারা।
পরে ক্লাবের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা হাইকোর্টে রিট করেন।
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পটপরিবর্তনের সুযোগে একদল বহিরাগত চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় ক্লাবের কয়েক সদস্য মারধরের শিকারও হন। পরবর্তী সময়ে ক্লাবে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
এ অচলাবস্থা নিরসনের কথা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক ক্লাবের নির্বাচিত ব্যবস্থা কমিটি ভেঙে দেন। পরে নিজেকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠনের অফিস আদেশ জারি করেন।
এসব আদেশ অন্যায়, অবৈধ, রাষ্ট্রীয় বিধিবিধান বহির্ভুত দাবি করে ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করা হয়। এরপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এইচআই