ধর্ষণের ৫ ঘটনায় ৩টিতেই শিকার শিশু
২৯ নভেম্বর ২০২৪ ০০:৩৩
ঢাকা: গত ৯ বছরে যেসব ধর্ষণ মামলা হয়েছে সেগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশে ধর্ষণের শিকার প্রতি পাঁচজনের তিনটিতেই শিকার শিশু। সে হিসাবে দেশে ৬০ শতাংশ ঘটনাতেই ধর্ষণের শিকার হয়েছে শিশুরা।
গত ৯ বছরে দায়ের হওয়া ১০ হাজারের বেশি ধর্ষণ মামলা বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। চলমান আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
ধর্ষণ মামলাগুলোর বিশ্লেষণের পরিসংখ্যান আরও বলছে, এসব মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে মাত্র এক-তৃতীয়াংশকে বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হয়। অন্যদিকে ৬৯ শতাংশ ক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তি এবং তার পরিবার ও স্বজনকেই বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিচারহীনতার এ সংস্কৃতিই দেশে নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রধান প্রতিবন্ধকতা। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে সরকারকে সবচেয়ে বড় উদ্যোগ নিতে হবে। ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুততম সময়ে করতে হবে। মামলার বাদী বা তার পরিবারের জন্য আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সেমিনারে জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার প্রতিনিধি জানান, বর্তমান সরকার এই সংস্কৃতির ইতি টানতে চায়।
অধিকার কর্মী রুমা সুলতানা বলেন, ‘গত ৯ বছরে ঘরে নারীর প্রতি সহিংসতার হার ৯ শতাংশ বেড়ে ৮৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রায় এক-চতুর্থাংশ নারীর দাবি, কর্মক্ষেত্রে তারা নিজেদের অনিরাপদ মনে করেন।’
নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতনকে সভ্যতার নিকৃষ্টতম অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেন অধিকার কর্মী শাহীন আনাম। তিনি এসব অপরাধে জড়িতদের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বর্তমান সরকার নারীদের প্রতি সহিংসতা রুখতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পরিচালক মোহাম্মদ আল মামুন বলেন, ‘যারা নানা সামাজিক কারণে আইনগত সহযোগিতা চাইতে পারছেন না, তারা আমাদের কাছে সে আইনি সহায়তা পেতে পারেন। এ ছাড়া যারা পারিবারিক সহিংসতা ও শারীরিক হেনস্তার শিকার, তারাও আমাদের কাছে আইনি সহায়তা পেতে পারেন।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলছে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা।
সারাবাংলা/টিআর