Tuesday 01 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশিদের বললেন বিজেপির শুভেন্দু— চিকিৎসা নিতে পাকিস্তানে যান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৯ নভেম্বর ২০২৪ ০১:৫২ | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৩৭

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের ভিসা বন্ধ রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নেতা শুভেন্দু অধিকারী।

কেবল ভিসা নয়, বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানি-রফতানিও বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, বাংলাদেশিরা যেন চিকিৎসার জন্য ভারতে না গিয়ে পাকিস্তানে যান।

বিজ্ঞাপন

ডেকান হেরাল্ডের খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) শুভেন্দু অধিকারী ও অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা চিন্ময় দাসের মুক্তি দাবি করেছেন। তারা কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশনের কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে শুভেন্দু বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার সম্পর্ক খুব ভালো। কিন্তু বর্তমান সরকার সেখানে ভারতবিরোধী মনোভাব গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এ ধরনের কিছু আগে কখনো ছিল না।’

বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য ভারতের পরিবর্তে পাকিস্তানে যেতে বলেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, ‘আপনারা (বাংলাদেশি নাগরিক) আর এখানে (ভারতে) চিকিৎসার জন্য আসবেন না। আপনারা (চিকিৎসা করাতে) করাচি বা লাহোরে যান।’

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি। তারা বলছে, চিন্ময়কে মুক্তি না দিলে শিগগিরই তারা বাংলাদেশ ও ভারতের বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আপনারা জানেন, সেখানে (বাংলাদেশে) হিন্দুদের ওপর নির্যাতন চলছে। এ নির্যাতন আর চলতে দেওয়া যাবে না। প্রভু চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ভুল কিছু করেননি। আমরা অবিলম্বে তার মুক্তি চাই। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। যথেষ্ট হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করুন। পাশাপাশি রফতানি ও আমদানির অনুমতিও বন্ধ করুন। আমরা একদিন অপেক্ষা করব। এর মধ্যে কথিত নির্যাতনের ঘটনাগুলো বন্ধ না হলে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পেট্রাপোল সীমান্ত অবরোধের কর্মসূচি শুরু করব।’

এর আগে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গত সোমবার ঢাকায় গ্রেফতার করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের একটি আদালতে তিনি জামিন আবেদন করলে আদালত সে আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় চট্টগ্রামে তার অনুসারীরা ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। আদালত চত্বরসংলগ্ন সড়কে বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে সেখানে সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে কোপানো হলে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চলছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ চাপানো হয়েছে, যিনি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে ন্যায্য দাবিগুলো উপস্থাপন করেছিলেন।’

পরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও পালটা বিবৃতি দিয়েছে। এতে নয়া দিল্লিার বিবৃতিতে ‘হতাশা’ প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, মঙ্গলবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা একটি বিবৃতি গণমাধ্যমের বরাতে সরকারের নজরে এসেছে। অত্যন্ত হতাশা ও গভীর দুঃখের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার উল্লেখ করছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার করার পর থেকে তার গ্রেফতারকে কিছু মহল ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছে। বাংলাদেশ সরকার বলতে চায়, এই ধরনের ভিত্তিহীন বিবৃতি শুধু সত্যকে বিকৃত করে না, বরং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার চেতনার পরিপন্থি।

সারাবাংলা/টিআর

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস চিন্ময় দাস বিজেপি শুভেন্দু অধিকারী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর