‘মাছ-মাংস তো দূরের কথা, চাহিদামতো সবজিই কিনতে পারি না’
৩০ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:০৯
মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের হাট-বাজারে শোভা পাচ্ছে মৌসুমি সবজি। বেড়েছে এর সরবরাহও। দিন দিন সরবরাহ বাড়লেও সবজির তুলনামূলক দাম কমেনি। শহরের পাশাপাশি গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারেও চড়া দাম। বেশি দামের কারণে সবজি হাটে যেতে নারাজ মধ্যবিত্তরাও। বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিম, মুলা, বেগুনসহ বেশ কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা কমেছে। সরবরাহ আরও বাড়লে দাম কমবে। ক্রেতারা বলেছেন, সবজির দাম তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
সরজমিন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সবজির বাজারে গিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। উপজেলার তরা গ্রামের চা বিক্রেতা বিল্লাল হোসেনের পরিবারের রয়েছে ৭ সদস্য। স্বল্প আয়ের পরিবারের এ কর্তা দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিতে যেন দিশেহারা। বাজারে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন সবজির দরদাম দেখে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা আলুর দামও ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আলু না কিনে নিম্ন আয়ের অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। তারা বলেছেন, মাছ-মাংস তো দূরের কথা, চাহিদামতো সবজি কিনতেও পারি না। গরিব মানুষের খাবার তালিকায় আলু প্রতিদিনই রাখা হয়। কিন্তু সেই আলুর দামও এখন ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজি। সিম, ফুলকপি, বেগুন, লাউসহ সবকিছুর দাম বেশি, যা আমাদের মত গরিব মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
বানিয়াজুরী গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, কাঁচা বাজারে সবগুলো সবজির দাম বেশি। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভালো কোন সবজি কিনতে পারিনা। ফুলকপি কেজি ৮০ টাকা। মাঝারি একটা লাউ কিনতেও ৭০ থেকে ৮০ টাকা গুনতে হচ্ছে। এ অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে দুবেলা খেয়ে থাকাটাই মুশকিল হয়ে গেছে।
বানিয়াজুরী গ্রামের শাহ আলম জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। বর্তমানেও একই অবস্থা। দাম কমলে আমাদের খাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়।
বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ডে কাঁচা মালামাল বিক্রেতা স্বপন কুমার ঘোষ বলেন, সবজির বাজারে প্রত্যেকটা সবজির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। আড়ত থেকে আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়। যে কারণে দাম একটু বেশি হলেও আমাদের করার কিছু থাকে না।
এদিকে বাজার মনিটরিং সংশ্লিষ্টদের গ্রামের বাজারগুলোতে তাদের কোন পদক্ষেপ দেখা যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে শহরের পাশাপাশি গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারে দ্রব্যমূল্যের অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে।
বানিয়াজুরি কাঁচাবাজারের ঘুরে দেখা গেছে শিম ৮০ থেকে ২০০ টাকা, ফুল কপি ৬০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, আলু ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, আদা ১২০ টাকা, রসুন ২৪ টাকা ও কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি এবং লেবু ২০ টাকা হালি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
সারাবাংলা/এসআর