ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে টিকেট কালোবাজারির অভিযোগ
১২ জুন ২০১৮ ২১:৩৩
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে ঈদকে সামনে রেখে টিকেট কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। এ কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে রেলওয়ের কয়েকজন কর্মচারি।
অভিযোগে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে প্রতিদিন আন্ত:নগর ও লোকাল মিলিয়ে আপডাউনে ১৫টি ট্রেন যাতায়াত করে। এ স্টেশন থেকে ট্রেনে চুয়াডাঙ্গা ও তার পাশ্ববর্তী মেহেরপুর এবং ঝিনাইদহ জেলার যাত্রীরা যাওয়া আসা করে। এর ফলে এখানে টিকেটের দারুন সঙ্কট রয়েছে। এছাড়া অনলাইনে টিকেট ৯ দিন আগে দেয়া শুরু করা সময় চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ের কিছু কর্মচারি চুয়াডাঙ্গার বরাদ্দ টিকেট গুলো বের করে রেখে সেগুলো কালোবাজারে নির্ধারিত মূল্য থেকে অধিক মূল্যে বিক্রি করছে। সে কারণে যাত্রীরা তাদের যাত্রার নির্ধারিত দিনের টিকেট পাচ্ছে না। বিশেষ করে ঢাকাগামী আন্ত:নগর সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেসের টিকেট কালোবাজারে বেমি বিক্রি হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে কালোবাজারিদের দৌরাত্ব বেমি দেখা যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে মঙ্গলবার ভোর তিনটার দিকে টিকেট কাউন্টারের সামনে কিছু ব্যক্তি পাটি বিছিয়ে শুয়ে আছে। কাউন্টারের একপাশে শুয়ে ছিলেন শহরের আরামপাড়ার বাবর আলীর ছেলে উজ্জ্বল, সাতগাড়ীর জহিরের ছেলে শহিদ, ফার্মপাড়ার আয়ুব শেখের বাবুল ও একই পাড়ার হারুনের ছেলে রাতুল। শুয়ে থাকার সময় তারা রেলওয়ে অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে টেবির ফ্যান চালাচ্ছিল।
শুয়ে থাকা উজ্জ্বল দাবি করেন, সে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মী। তার বাবা রেলওয়েতে চাকরি করতো। সে কারণে এখানকার অফিস কর্মচারি ডালিম তাকে ফ্যান ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছি। উজ্জ্বল বলেন যে, তিনি ৪টি টিকেট নেবেন। এই টিকেট কি হবে জানতে চাইলে তিনি নিশ্চুপ থাকেন।
রেলওয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে দেয়ার বিষয়ে বুকিং সহকারি ডালিম জানান, ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীর অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী তুহিনের নির্দেশে তিনি ফ্যান চালানোর জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়েছিলেন।
বাবুল নিজে রেলওয়েতে চাকরি করে দাবি করে বলেন, কামাল আমাকে একটি টিকেটের জন্য বলেছে। সেজন্য তিনি এখানে শুয়ে থাকতে বলেছে।
টিকেট নিতে আসা একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেন, চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনের টিকেট কাউন্টারের বুকিং সহকারি ডালিম, নজরুল, ইমরান, তোরাব ও শিলা তাদের লোকজন রেখে টিকেটগুলো তাদের মাধ্যমে কাটিয়ে নিয়ে পরে তাদের কাছে রেখে বেশি মূল্যে বিক্রি করে। ডালিম ও শিলা রেলওয়ে কর্মচারি, তোরাব সিএনএস কোম্পানীতে কর্মরত, নজরুল সাবেক বুকিং সহকারি ও ইমরান বহিরাগত। এরাই কাউন্টারের টিকেট নিয়ন্ত্রণ করে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
টিকেট কালোবাজারির বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারি আব্দুস সামাদ বলেন, কালোবাজারির বিষয়টি আমি জানি না। তবে কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত বলেন, টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে।
সারাবাংলা/টিএম