ব্যয় যৌক্তিকভাবে নির্ধারণের নির্দেশ
১৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড ভবন নির্মাণের প্রস্তাব ফেরত
১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৪২ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:১৬
ঢাকা : সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ১৮২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (বিকেকেবি) ভবন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের প্রস্তাব ফেরত পাঠিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) কমিশনে পাঠাতে বলা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, বিভিন্ন সুপারিশ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এসব সুপারিশ প্রতিপালন করে সংশোধিত ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশন পাঠানো হলে অনুমোদনের পরবর্তী ধাপের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
জানা যায়, প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল। প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় প্রায় ২৮ দশমিক ৭৪ কাঠা নিজস্ব জমি রয়েছে। প্রস্তাবিত বহুতল ভবনটি মতিঝিল এজিবি কলোনিতে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন মতিঝিল মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাম কমিউনিটি সেন্টারের পুরাতন জরার্জীর্ণ ভবনটি ভেঙ্গে এই স্থানে ৩টি বেইজমেন্ট বিশিষ্ট ১৫ তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা হবে। ভবনের প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন ১১ হাজার ৬০ বর্গফুট। ভবনটিতে ২টি বেজমেন্ট ও একটি সেমি বেজমেন্টে ৬৭টি এবং নিচতলায় ৩টি সহ মোট ৭০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নিচতলা ও দোতলায় সুপার শপ বা শো-রুম, দোকান, তিন তলা থেকে ১২তলা পর্যন্ত ব্যাংক বা কর্পোরেট অফিস, ১৩ তলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও সভা কক্ষ, ১৪ তলায় কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের গেস্ট হাউজ ও কনফারেন্স কাম-মাল্টিপারপাস হল এবং ১৫ তলায় কমিউনিটি সেন্টার, রুপটপ রেস্টুরেন্ট ও ছাদবাগানের সংস্থান রয়েছে।
পিইসি সভায় ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) কবির আহমদ বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
সভায় পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো প্রধান বলেন, প্রস্তাবিত ভবনের মাটি পরীক্ষা, মান নিশ্চিত করা, কাঁচামালের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা, প্ল্যাম্বিং নকশা, আর্কিটেকচারাল নকশা ও থ্রিডি মডেল ইত্যাদি অঙ্গের ব্যয় যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
ভৌত অবকাঠামো বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বলেন, গেস্ট হাউজ ভাড়া দিয়ে প্রতিষ্ঠানের আয় তেমন বৃদ্ধি পাবে না। কিন্তু এটা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অনেক জনবলের প্রয়োজন হবে, যা ব্যয় বহুল।
এ বিষয়ে বৈঠকের সভাপতি সোলেমান খান বলেন, একই ফ্লোরে কনফারেন্স রুম ও গেস্ট হাউজ পাশাপাশি থাকলে কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সভায় ব্যাঘাত সৃষ্টিসহ অতিথিদের প্রাইভেসি নষ্ট হবে। এছাড়া ১৫ তলায় কমিউনিটি সেন্টারে প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে, যাতে অনেক লোকের সমাগম হবে। লিফটের মাধ্যমে এত অধিক সংখ্যক মানুষের ওঠানামা এবং রান্নার আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র উত্তোলন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে অগ্নি দূর্ঘটনার ঝুঁকি থাকায় সুপার শপ, দোকানের উপরে তৃতীয় তলায় কমিউনিটি সন্টার স্থাপন করা যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে বিকেকেবি‘র মহাপরিচালক পিইসি সভায় বলেন, যেহেতু বিকেকেবি অনাবাসিক প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে থাকে, তাই গেস্ট হাউজ বাদ দেওয়া যেতে পারে।
সভায় অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ৭ ক্যাটাগরির ১০ জন জনবল নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু জনবল কমিটির সুপারিশ নেওয়া হয়েছে কি না -তা স্পষ্ট নয়।
এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বলেন, জনবল কমিটির সুপারিশ নেওয়ার জন্য এরমধ্যে অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সুপারিশ পাওয়া গেলে তা পুনর্গঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) সংযুক্ত করা হবে।
সারাবাংলা/জেজে/আরএস