সাইফুল আলমের নামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের সব শেয়ার ক্রোকের আদেশ
১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৪ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:১৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম মাসুদের নামে বেসরকারি ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকে থাকা সব শেয়ার ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। জনতা ব্যাংকের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ে আদালতে দায়ের হওয়া এক মামলায় এ আদেশ এসেছে। আদালত ঋণ প্রদান ও আদায়ের ক্ষেত্রে অনিয়মের বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার (১ ডিসেম্বর) অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বিচারক যুগ্ম জেলা জজ মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন বলে বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম জানিয়েছেন।
এদিন সকালে জনতা ব্যাংকের পক্ষ থেকে সাইফুল আলম মাসুদসহ ১০ ব্যক্তি ও এস আলম গ্রুপের পরিচালনাধীন ১৪ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়। জনতা ব্যাংক, চট্টগ্রাম করপোরেট শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক বাদল কান্তি দাশ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় ১০ বিবাদী হলেন- মো. সাইফুল আলম, তার ভাই আবদুল্লাহ হাছান, আব্দুস সামাদ লাবু, শহীদুল আলম, মোহাম্মদ রাশেদুল আলম ও ওসমান গণি, লাবুর স্ত্রী শাহানা ফেরদাউছ, সাইফুল আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীন, মোহাম্মদ আবদুছ ছবুর এবং মিশকাত আহমেদ। এরা সবাই এস আলম গ্রুপের ঋণ গ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে আছেন।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেড, এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড, এস আলম সুগার রিফাইন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড, এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড, এস আলম স্টিলস লিমিটেড, এস আলম সিমেন্ট লিমিটেড, এস আলম ব্রাদার্স লিমিটেড, এস আলম সয়া সীড লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং মিলস লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড, এস আলম লাক্সারি চেয়ার কোচ সার্ভিস লিমিটেড এবং চেমন ইস্পাত লিমিটেড।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের নামে জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রামের করপোরেট শাখা থেকে নেওয়া ১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়ে ১ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। পুনঃতফশিলের পর ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঋণ পরিশোধের মেয়াদ শেষ হয়।
ঋণ অনাদায়ী থাকা অবস্থায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তন হলে সাইফুল আলমসহ বিবাদী ব্যক্তিরা পালিয়ে যান। গত ৯ অক্টোবর ঋণ পুনঃনবায়ন সুবিধা বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ অবস্থায় খেলাপি ঋণ আদায়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় জনতা ব্যাংক।
মামলার আরজিতে জনতা ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাইফুল আলমের (মাসুদ) অনৈতিক প্রভাব ও চাপে বাধ্য হয়ে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এস আলম গ্রুপকে বড় অঙ্কের ঋণ মঞ্জুর করতে বাধ্য হয়।
অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক এস আলমের মালিকানাধীন ব্যাংক ছিল। সেখানে সাইফুল আলম মাসুদের শেয়ার আছে। সেসব শেয়ার ক্রোক করে জনতা ব্যাংকের সমূদয় পাওনা আদায়ের জন্য আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া ঋণ প্রদান ও আদায়ে অনিয়মের বিষয় দুদককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম