পাটুরিয়ায়-দৌলতদিয়ায় ট্রাক পারাপার বন্ধ বুধবার থেকে
১২ জুন ২০১৮ ২৩:০৯
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
মানিকগঞ্জ: ঈদযাত্রায় নির্বিঘ্ন করতে বুধবার (১৩ জুন) থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখা হবে। এ ছাড়া, ঈদের বাড়তি যাত্রীর চাপ সামলাতে এই রুটে বাড়ানো হয়েছে ফেরির সংখ্যা। মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, ঘাটের পরিস্থিতি ও নদীপথে যাত্রীদের নিরাপত্তায় গৃহীত ব্যবস্থা পরিদর্শন করেছেন নৌপুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান। মঙ্গলবার (১২ জুন) দুপুরে ঘাট পরিদর্শনের সময় তার সাথে ছিলেন নৌপুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজ মাহবুবুর রহমান, নৌপুলিশের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আরেফ ও মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীমসহ বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষ এই নৌরুটে চলাচল করে থাকেন। ঈদে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বুধবার থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া নৌপথে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখা হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্র জানায়, এই ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনা করে এই নৌপথে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার এই পথে আটটি রো রো (বড়), সাতটি ইউটিলিটি (মাঝারি) ও চারটি কে-টাইপসহ (ছোট) মোট ১৯টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হয়। আগামীকাল বুধবার আরেকটি রো রো ফেরি এই পথে যানবাহন পারাপারে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে মহাসড়কের শিবালয় উপজেলার টেপড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশ ব্যক্তিগত ছোট গাড়িগুলোকে টেপড়া-নালী সড়ক দিয়ে চলাচলে সহায়তা করছে। এসব ছোট গাড়িগুলোকে পাটুরিয়ার পাঁচ নম্বর ঘাট দিয়ে নদী পার করা হচ্ছে।
এ ছাড়া যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকগুলো উথলী-পাটুরিয়া সংযোগ সড়ক হয়ে সরাসরি ঘাট এলাকায় যাচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে এসব যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এ সময় পাটুরিয়া ঘাট এলাকা থেকে এক কিলোমিটার দূরের আরসিএল মোড় পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায় যানবাহনের সারি।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) তানভীর হোসেন বলেন, ঈদের আগে এই নৌপথে ২০টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হবে। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়লেও এই পর্যাপ্তসংখ্যক ফেরি দিয়ে নির্বিঘ্নে পারাপার করা হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার নৌপুলিশের ডিআইজি শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসানের ঘাট পরিদর্শনের সময় তার কাছে অভিযোগ করা হয়, আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে চলাচলরত স্পিডবোটগুলোতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
এ অভিযোগের বিষয়ে ডিআইজি বলেন, এই অভিযোগ আমিও শুনেছি। যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে নৌপুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়তি ভাড়া কেউ আদায় করলে এবং অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিআইজি শেখ মারুফ আরো বলেন, নৌপুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সব যাত্রীই যেন গন্তব্যে পৌঁছে স্বজনদের সাথে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়াসহ দেশের অন্যান্য নৌরুটেও নৌপুলিশ সদস্যরা আন্তরিভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, যাত্রী পারাপার নিশ্চিত করতে জরুরি ও সরকারি কাজে নিয়োজিত ট্রাক ছাড়া সব ধরনের ট্রাক পারাপার বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে।
সারাবাংলা/টিএম/টিআর