Monday 02 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিউক্লিয়ার সেন্টার: ৫ মেডিকেলের নাম যাচাই ও যৌক্তিক ব্যয় নির্ধারণের নির্দেশ

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:০৬ | আপডেট: ২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৫৯

ঢাকা: দেশের পাঁচটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউক্লিয়ার চিকিৎসা সেন্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিগত সরকার। সে লক্ষ্যে ‘দেশের ৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস (ইনমাস) স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কশিন। তবে ওই পাঁচ হাসপাতালেই সেন্টারগুলো স্থাপনের সম্ভাব্যতা নতুন করে যাচাই করতে বলেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পের অঙ্গভিত্তিক ব্যায় বিভাজনও যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের তালিকাভুক্ত হাসপাতালগুলো হলো— সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ও কিশোরগঞ্জের শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকার ৬৯৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা অনুদান দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সভায় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রকল্প এলাকা হিসেবে প্রস্তাবিত পাঁচ হাসপাতালের নামের তালিকা পরিবর্তনের সম্ভাবনার বিষয়টি যাচাই করে ডিপিপিতে সঠিক নাম অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি প্রকল্পের ভূমিকা সুনির্দিষ্ট ও যথাযথভাবে উল্লেখ করা এবং প্রকল্পের অঙ্গভিত্তিক ব্যয় বিভাজন যৌক্তিভাবে নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সভায় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিনিধি বলেন, পরমাণু প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে ১৯৬০ সাল থেকে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন বিভিন্ন ধরনের পরমাণু চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। এ দীর্ঘ সময়ে পরমাণু শক্তি কমিশন দেশের ১৪টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন নিউক্লিয়ার অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সের এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) একটি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড এ্যালায়েড সায়েন্স (নিনমাস) স্থাপন করে অত্যাধুনিক পরমাণু প্রযুাক্তির চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।

সভায় তিনি জানান, বর্তমানে আরও আটটি ইনমাস স্থাপনের চলমান। এরই মধ্যে দেশে সরকারি পর্যায়ে নতুন নতুন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী অনেক সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসা সেবার সুযোগ নেই। সে সব হাসপাতালেও পরমাণু চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালু করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

পরমাণু শক্তি কমিশনের এই প্রতিনিধি আরও বলেন, ২০২৩ সালের আগে ১৫টি মেডিকেল কলেজ প্রকল্পের মাধ্যমে ছয় লাখ ৫৮ হাজার ৭৫৭ জন সেবা প্রার্থীদের সেবা দেওয়ার মাধ্যমে রাজস্ব খাতে ৫৩ কোটি ১৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা আয় হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষকে দেওয়া এ সব সেবার প্রচার ও প্রসারের যথেষ্ট ব্যবস্থা নেই। দরিদ্র ও সাধারণ মানুষকে স্বল্পমূল্যে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পরমাণু চিকিৎসা প্রদান ও পরমাণু চিকিৎসা সেবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সভায় পিইসি সদস্যরা বলেন, প্রকল্প এলাকা হিসেবে প্রস্তাবিত পাঁচটি হাসপাতালের নামকরণে পরিবর্তন এসেছে কি না, তা যাচাই করা প্রয়োজন। যাচাই করে সঠিক নামের তালিকা অনুযায়ী ডিপিপিতে প্রকল্প এলাকার নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ডিপিপিতে প্রকল্পের ভূমিকা সুনির্দিষ্ট ও যথাযথভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

এ ছাড়া প্রকল্পের অঙ্গভিত্তিক ব্যয় বিভাজন, পরামর্শক নিয়োগের বিস্তারিত তথ্য আরও সুনির্দিষ্ট ও যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন পিইসি সদস্যরা। বলেন, নন-শিডিউল আইটেমের ক্ষেত্রে বাজারদর কমিটি গঠন করে বাজারদর নির্ধারণ এবং বাজারদর কমিটির সুপারিশের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যয় প্রাক্কলন ও কমিটির সুপারিশ প্রতিবেদন ডিপিপিতে সংযোজন করতে হবে।

সভায় আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান আব্দুর রউফ বলেন, প্রকল্পের জন্য অর্থ বিভাগ সম্পূর্ণ সরকারি অনুদানে মোট ৬৯৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে সম্মতি দিলেও ডিপিপিতে প্রাক্কলিত ব্যয় ৬৯৭ কোটি দুই লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা যুক্তিযুক্ত নয়। এ ছাড়া প্রকল্পের ডিপিপিতে বাস্তবায়নকাল চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদকাল পরিবর্তন করে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করা সমীচীন হবে বলে অভিমত দেন তিনি।

সারাবাংলা/জেজে/আরএস

নিওক্লিয়ার চিকিৎসা সেন্টার স্থাপনে স্বাস্থ্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর