টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ
ফাইনালে উঠতে কোন দলকে কী করতে হবে?
২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:২৭ | আপডেট: ২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৭
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের চক্রের বাকি আর মাত্র ১৫ ম্যাচ। ফাইনালের অল্প কিছুদিন বাকি থাকলেও এখনো নিশ্চিতভাবে দুই ফাইনালিস্টের নাম বলার উপায় নেই! শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এছাড়া ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, শ্রীলংকা, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান; ৭ দলেরই রয়েছে লর্ডসের ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা। চলুন দেখে নেওয়া যাক ফাইনালে উঠতে হলে ৭ দলের সামনে কোন সমীকরণ অপেক্ষা করছে।
ভারত
পারসেন্টেজ- ৬১.১১, ম্যাচ বাকি ৪টি (অ্যাওয়ে)
দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের আগেও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার রাস্তাটা বেশ মসৃণ ছিল তাদের সামনে। তবে কিউইদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ভারতের ফাইনালে ওঠাটা পথ বেশ কঠিন হয়ে গেছে। যদিও ফাইনালের সমীকরণটা এখনো নিজেদের হাতেই আছে রোহিত শর্মাদের।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ ম্যাচ সিরিজই তাদের এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের শেষ সিরিজ। প্রথম টেস্টে পার্থে দুর্দান্ত এক জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেছেন কোহলি-বুমরাহরা। অন্য কোনো সমীকরণের দিকে না তাকিয়ে লর্ডসের ফাইনাল নিশ্চিত করতে হলে ভারতকে এই সিরিজ জিততে হবে ৪-১ ব্যবধানে। এই ব্যবধানে সিরিজ জিতলেই ভারতের পারসেন্টেজ পয়েন্ট হবে ৬৪.০৪, তাদের ফাইনালে ওঠার জন্য যথেষ্ট হবে। শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার সামনেই সুযোগ থাকবে ভারতকে টপকে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠতে। তখন দ্বিতীয় দল হিসেবে ফাইনালে পৌঁছে যাবে ভারত।
ভারত যদি অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২-৩ ব্যবধানে সিরিজ হারে, তবুও তাদের ফাইনালে খেলার সুযোগ থাকবে। সেক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সিরিজ ড্র হতে হবে ১-১ ব্যবধানে। শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই সিরিজের দক্ষিণ আফ্রিকাকে ড্র করতে হবে ১-১ ব্যবধানে। শ্রীলংকার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সিরিজও ০-০ ব্যবধানে ড্র হতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকা
পারসেন্টেজ- ৫৯.২৬, ম্যাচ বাকি শ্রীলংকার বিপক্ষে ১টি (হোম), পাকিস্তানের বিপক্ষে ২টি (হোম)
কয়েক মাস আগেও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে তাদের অবস্থান খুব একটা ভালো ছিল না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ফাইনালে ওঠার অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সবশেষ শ্রীলংকার বিপক্ষে ডারবানে বড় ব্যবধানের জয়ে এই পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেছে প্রোটিয়ারা। যদি তারা শ্রীলংকার বিপক্ষে পরের টেস্ট হেরে যায় ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি টেস্টই জিতে যায়, তাহলে তাদের পারসেন্টেজ হবে ৬১.১১। তবে শ্রীলংকা ও ভারত এই ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকাকে টপকে যেতে পারে যদি শ্রীলংকা অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ ব্যবধানে হারায় ও ভারত সিরিজের বাকি তিন ম্যাচ জিতে যায়।
দক্ষিণ আফ্রিকা যদি শ্রীলংকাকে দ্বিতীয় টেস্টে হারায় ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ১-১ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করে, তবুও তারা ৬১.১১ পয়েন্ট নিয়ে শেষ করবে। সেক্ষেত্রে যদি শ্রীলংকা অজিদের ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে দেয় তাহলেই কেবল ফাইনালে ওঠার সুযোগ থাকবে প্রোটিয়াদের সামনে। তাহলে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার যেকোনো এক দলই টপকে যেতে পারবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
অস্ট্রেলিয়া
পারসেন্টেজ- ৫৭.৬৯ ম্যাচ বাকি-ভারতের বিপক্ষে ৪টি (হোম), শ্রীলংকার বিপক্ষে ২টি (অ্যাওয়ে)
ভারতের পর ফাইনালে ওঠার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। পার্থে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারে কিছুটা ব্যাকফুটে থাকা অজিদের সামনে এখনো সুযোগ আছে সহজে ফাইনালে পৌঁছানোর। নিজেদের শেষ ৬ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে জিততে হবে ৪টিতে, ড্র করতে হবে একটিতে। তাহলেই কেবল দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলংকার চেয়ে এগিয়ে থাকবে অজিরা।
ভারতের কাছে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ হারলেও শ্রীলংকাকে ২-০ ব্যবধানে হারালে ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকবে অস্ট্রেলিয়া। তখন তাদের পারসেন্টেজ পয়েন্ট হয়ে ৬০.৫৩, ভারতের হবে ৫৮.৭৭। তখন শুধু দক্ষিণ আফ্রিকাই টপকে যেতে পারবে অজিদের।
নিউজিল্যান্ড
পারসেন্টেজ- ৫০.০০ ম্যাচ বাকি-ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২টি (হোম)
দেশের মাটিতে প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে বড় ধাক্কা খেয়েছে নিউজিল্যান্ডের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন। ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হারালে ৬৪.২৯ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে থাকতো কিউইরা। তবে শেষ দুই ম্যাচ জিতলেও তাদের পয়েন্ট হবে ৫৭.১৪। ফাইনালে উঠতে হলে এখন অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।
ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ ড্র হতে হবে ১-১ ব্যবধানে। দক্ষিণ আফ্রিকা দুটি সিরিজ ও অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলংকা সিরিজও একই ব্যবধানে ড্র হতে হবে। তাহলেই কেবল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে ফাইনাল নিশ্চিত করবে কিউইরা। অন্য সিরিজে ভিন্ন ফলাফল এলেই নিউজিল্যান্ডের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।
ইংল্যান্ড
পারসেন্টেজ- ৪৩.৭৫ ম্যাচ বাকি-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২টি (অ্যাওয়ে)
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা শুধুই কাগজে-কলমে বেঁচে আছে ইংল্যান্ডের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের বাকি ম্যাচ তো জিততে হবেই, তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য সিরিজের ফলাফলের দিকে। ভারতকে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ হারতে হবে অজিদের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলংকাকে নিজেদের বাকি ম্যাচগুলো থেকে যথাক্রমে ৬ ও ১৬ পয়েন্ট পেতে ব্যর্থ হলেই কেবল তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থেকে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ফাইনালে পৌঁছে যাবে ইংলিশরা।
পাকিস্তান
পারসেন্টেজ- ৩৩.৩৩, ম্যাচ বাকি-দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২টি (অ্যাওয়ে), ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২টি (অ্যাওয়ে)
পাকিস্তানের ফাইনালে ওঠার রাস্তাটা বেশ কঠিন। তারা যদি নিজেদের বাকি ৪ ম্যাচই জিতে যায়, তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ৫২.৩৮। এর পরেও তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের ফলাফলের দিকে। শ্রীলংকাকে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারতে হবে ১-০ ব্যবধানে, অস্ট্রেলিয়ার সাথে ড্র করতে হবে ১-১ ব্যবধানে। ভারতকে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হবে ১-২ ব্যবধানে। নিউজিল্যান্ডকে ইংল্যান্ডের কাছে হারতে হবে ১-২ ব্যবধানে। তাহলেই কেবল দ্বিতীয় স্থানে থেকে ফাইনালে পৌঁছে যাবে পাকিস্তান।
শ্রীলংকা
পারসেন্টেজ- ৫০.০০, ম্যাচ বাকি-দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১টি (অ্যাওয়ে), অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২টি (হোম)
ফাইনালের ওঠার সম্ভাবনা এখনো বেঁচে আছে শ্রীলংকার। বাকি তিন টেস্টে জিতলে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৬১.৫৪। এমনটা হলে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার শুধু একজনই টপকে যেতে পারবে লংকানদের। যদি শ্রীলংকা একটি ম্যাচ হেরে যায় ও বাকি দুটিতে জেতে, তাহলে অন্যদের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের। ৫৩.৮৫ পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলংকা তখন নিউজিল্যান্ডের হার ও অস্ট্রেলিয়া-ভারত সিরিজ ড্র চাইবে।
সারাবাংলা/এফএম
অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ দক্ষিণ আফ্রিকা পাকিস্তান ফাইনাল ভারত শ্রীলংকা