জমজমাট ফুটপাতের ভাসমান ঈদ বাজার
১৩ জুন ২০১৮ ০৯:০৫
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ঈদের আর দু’দিন বাকি। পরিবার-পরিজনদের জন্য নতুন পোশাক কিনতে রাজধানীর বিপণী-বিতানগুলোতে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। পাশাপাশি ঈদের ছোঁয়া লেগেছে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও। ক্রেতা-বিক্রেতাদের দরদামে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্তও চলছে কেনাবেচা।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, ঢাকামুখী মানুষের হার ৩০ শতাংশেরও বেশি। এর হাওয়া লেগেছে এবারের ঈদের বাজারেও। বড় বড় অভিজাত বিপণী বিতানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জমে উঠেছে ফুটপাতে ভাসমান ঈদ-বাজার। এই বাজারের বেশিরভাগ বিক্রেতাই ভাসমান, ঈদকে কেন্দ্র করে গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছেন মৌসুমি আয়ের উদ্দেশ্যে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাংলাবাজার, মতিঝিল, শাহবাগ, মিরপুর রোড, গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু এ্যভিনিউ, ফার্মগেটসহ ঢাকার অলিতে গলিতে ভাসমান ঈদের বাজার গড়ে উঠেছে।
এই ঈদ বাজারগুলোর বেশিরভাগই ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে। ফুটপাতে অস্থায়ীভাবে টেবিল বসিয়ে পণ্যের পসার নিয়ে বসা এই শহরের পুরনো চিত্র। তার সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে তিন চাকার ভ্যান গাড়ি। এখন ফুটপাতের পাশে ভ্যান গাড়িতেও ঈদের বাজারে কেনাকাটা চলছে পুরোদমে।
মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় ভ্যান গাড়িতে প্যান্টের দোকান সাজিয়ে বেচাকেনা করছে মনির। নোয়াখালি থেকে আসা মনিরের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।
মনির বলেন, রোজার সময় বাড়িতে (নোয়াখালি) কাজ নেই। তাই সময়টা কাজে লাগাতে ঢাকায় । যাতে ঈদটা সবাইকে নিয়ে ভালোভাবে কাটানো যায়।
তিনি জানান, তার ভ্যান গাড়ি দোকানের কোনো কিছুতেই তার বিনিয়োগ নেই। ভ্যান গাড়ি এবং মালপত্র সবকিছুই এখানকার একটি গ্রুপ যোগান দেয়। তিনি শুধু বিক্রি করেন। এতে তার প্রতিদিন ৫শ টাকার মতো আয় হয়।
ফুটপাতের এই ঈদ বাজারে নতুন-পুরাতন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি জিনিসও পাওয়া যাচ্ছে। ছেলেদের জামা, মেয়েদের ফ্রক, জুতা, ঘড়ি, লুঙ্গি থেকে শুরু করে ঘরের আসবাবও পাওয়া যাচ্ছে এখানে।
ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন কর্মকর্তাকে দেখা গেল ফুটপাতের ঈদের বাজার থেকে কেনাকাটা করতে। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, শুধু ঈদেই না, সব সময়েই ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করি। কেননা বড় বড় বিপণী বিতানে যা পাওয়া যায়, ফুটপাতের দোকানেও এখন তা পাওয়া যায়। আর অফিসের নিচেই পাওয়া যায় বলে যানজট ঠেলে ঝুট-ঝামেলা পোহাতে হয় না।
ঝুমুর নামের একজন মাঝবয়সী ক্রেতা জানান, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে আয়ার কাজ করেন। গুলিস্তানের ফুটপাতে কম দামে জামা-কাপড় পাওয়া যায়। তাই তিনি তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে গুলিস্তান এসেছেন।
রাজধানীর ফুটপাতের ব্রিক্রেতারা জানান, এলাকাভেদে ফুটপপাতের একটি দোকানের ভাড়া প্রতিদিন ৩শ টাকা থেকে ৮শ টাকা দিতে হয়। পুলিশ ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এই ভাড়ার টাকা নিয়ে থাকেন বলেও জানান তারা।
সারাবাংলা/জেআইএল/জেডএফ