আইনজীবী খুনের ঘটনায় চসিক মেয়র
নিরীহ কাউকে নয়, সন্ত্রাসীদের ধরুন
২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৮ | আপডেট: ২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত কোনো নিরীহ কর্মীকে গ্রেফতার না করার অনুরোধ করেছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেছেন, আমরা চাই যারা চট্টগ্রাম নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখছে তারা যেন নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র একথা বলেন।
সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাদের একজন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমি পরিষ্কার বলতে চাই, অতি দ্রুত খুনি সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করতে হবে। সন্ত্রাসী যে-ই হোক, সে যদি সিটি করপোরেশনের কোনো পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারিও হয়ে থাকে, তাকে অবশ্যই প্রশাসন গ্রেফতার করবে, এ বিষয়ে সিটি করপোরেশন কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।’
তিনি বলেন, ‘তবে আমি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি, যেন করপোরেশনের কোনো নিরীহ কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেফতার না হয়, সেটা নজরে রাখতে হবে। আমাদের পরিচ্ছন্ন বিভাগের যেসব কর্মচারী দিনরাত পরিশ্রম করে চট্টগ্রাম নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখছে, তারা যাতে নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে। আর চিহ্নিত যেসব সন্ত্রাসী এ কাজ করেছে তারা আইনের আওতায় আসবে। জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত শাস্তি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমি চাই।’
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা ও সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গত ২৬ নভেম্বর কারাগারে পাঠানো নিয়ে তার অনুসারীদের সঙ্গে আদালত প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের মধ্যে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের মূল প্রবেশপথের সামনে রঙ্গম সিনেমা হলের অদূরে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় সেবক কলোনির (চসিকের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের আবাস) কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, ‘আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখানে যারা অনুপস্থিত আছেন কিংবা কাজের গাফিলতি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা চাই, তারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে জনগণকে সেবা দেবে। যারা সচিব আছে, কাজ করছে না অথবা যাদের বিরুদ্ধে আমরা সমস্যা পেয়েছি, গতকাল দেখেছেন আমরা একটা আদেশ করে তাদের বদলি করে দিয়েছি। সেখানেও যদি তারা আগের মতো দায়িত্ব ঠিকমতো পালন না করে তবে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দায়িত্বে ফাঁকি দিলেই শাস্তি হবে। জনগণকে ভোগালে চাকরি থাকবে না।’
নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা রাতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। দিনের বেলায় যত্রতত্র ময়লা না ফেলে একটা সুনির্দিষ্ট সময় আপনারা ফেলুন, বিকেলে বা সন্ধ্যার পরে। আমরা সেটা সংগ্রহ করে নিয়ে যাব। সুনির্দিষ্ট সময়ে ময়লা ফেললে আমাদের পরিষ্কার করতে সুবিধা হবে। আমরা সবাই মিলে একটা সুন্দর পরিচ্ছন্ন শহর, ক্লিন-গ্রিন-হেলদি সিটি গড়ে তুলব।’
এ সময় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারি মারুফুল হক চৌধুরী মারুফ উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম