চট্টগ্রাম ব্যুরো: ‘শীর্ষ ঋণখেলাপি’ শিপ ব্রেকিং ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান লস্করের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। অস্তিত্ববিহীন শিপ ব্রেকিং ব্যবসার নামে নেওয়া ঋণের বিপরীতে প্রায় ১৯০ কোটি টাকা দায়দেনা পরিশোধ না করায় ন্যাশনাল ব্যাংকের এক মামলায় তার বিরুদ্ধে দেওয়ানি আটকাদেশ দিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বিচারক যুগ্ম জেলা জজ মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন বলে বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম জানিয়েছেন।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত আশিকুর রহমান লস্কর চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার বাসিন্দা। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ঋণখেলাপি আশিকুর ২০২৩ সালে বিদেশে পালিয়ে গেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে শিপ ব্রেকিং ব্যবসার জন্য আশিকুর রহমান লস্করের প্রতিষ্ঠান গ্র্যান্ড ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ ন্যাশনাল ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ১৭৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ঋণ পরিশোধ না করে গ্রহীতারা লাপাত্তা হয়ে যান। ব্যাংকের নথিতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের উত্তর সোনাছড়িতে গ্রান্ড ট্রেডিংয়ের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পায়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায় ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর আশিকুর রহমান লস্করের বিরুদ্ধে ১৭৫ কোটি টাকার অর্থঋণ মামলা দায়ের করে ন্যাশনাল ব্যাংক। আদালত তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু এর পরও গত দু’বছরে ঋণ পরিশোধ না করায় বর্তমানে ব্যাংকের কাছে আশিকুরের দায়দেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮৯ কোটি ৪৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪২ টাকা। নালিশী ঋণের বিপরীতে ওই পরিমাণ সম্পদ বন্ধক না থাকায় এ বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় ন্যাশনাল ব্যাংক।
অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম সারাবাংলাকে জানান, ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অর্থঋণ আদালত আইনের ৩৪ ধারা অনুযায়ী আশিকুর রহমান লস্করের বিরুদ্ধে পাঁচ মাসের দেওয়ানি আটকাদেশ দেন। এ আটকাদেশ কার্যকরের জন্য একই আইনের ৩৫ ধারা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।