চুয়াডাঙ্গায় বস্তায় আদা চাষে সাফল্য
৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:১৭ | আপডেট: ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:৩৭
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১০ হাজার বস্তায় আদা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তার চেয়ে বেশি আদা আবাদ করছেন কৃষকরা। প্রদর্শনী প্লট ও উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে বস্তায় আদা আবাদের সম্প্রসারণ ঘটানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
পরিচর্যার মাধ্যমে কৃষকদের বপন করা আদা বস্তায় বেড়ে উঠছে। আলমডাঙ্গায় অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা জমিতে বস্তা পদ্ধতিতে এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে আদা আবাদ করা হচ্ছে ।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে আদা আবাদের এ বাণিজ্যিক আগ্রহ দেখিয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা কবির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমদানি নির্ভর কৃষিপণ্যগুলো যাতে দেশেই উৎপাদন করা যায় সেই আগ্রহটা আমার সব সময় ছিল। বিশেষ করে প্রতিবছর আদা আমদানি করে দেশের প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয় এবং দামও অনেক বেশি পড়ে। তাই দেশের বৈদেশিক মুদ্রা যাতে ব্যয় কম হয়, সেই লক্ষ্যে বস্তায় আদা আবাদ শুরু করেছি।’
আঁইলহাস গ্রামের মমিনুল ইসলাম জানান, আদা বস্তায় রোপণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বর্ষায় আদা আবাদ করলে অনেক ক্ষতি হয়। যে কারণে কৃষকরা আদা আবাদে আগ্রহী হয়না।
নাগদহ গ্রামের উদ্যোক্তা জহুরুল ইসলাম জানান,বস্তা পদ্ধতিতে আদা আবাদ সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত। কারণ অতিবৃষ্টি ও খরাসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হলে বস্তা দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যায়। ফলে আদা গাছ সুরক্ষিত থাকে।
এ বছর ১০ হাজার বস্তায় প্রাথমিকভাবে আদা আবাদের কথা জানিয়ে উদ্যোক্তারা বলেন, প্রতিটা বস্তায় ৬০-৭০ টাকা করে খরচ হয়েছে। একেকটি বস্তায় আধা কেজি করে আদার ফলন হলেও খরচ বাদ দিয়ে লাভবান হওয়ার আশা করছি। আদার ক্ষেত পরিদর্শন করে জানা যায়, মেহগনি গাছের নিচে বস্তায় বস্তায় তরতাজা আদা গাছগুলো সতেজ অবস্থায় রয়েছে। আর আদা গাছ পরিচর্যায় রয়েছেন দু’জন নারী ও একজন পুরুষ শ্রমিক। প্রতিটা গাছের গোড়ায় দেখা
যাচ্ছে আদা।
আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসের সঠিক পরামর্শে বর্ষায় কাদা-পানির মধ্যে বেড়ে উঠেছে আদা গাছ। বস্তা পদ্ধতিতে আদা আবাদ এলাকায় নতুন বলে জানান কৃষকরা।
আলমডাঙ্গা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান,উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নে বস্তা পদ্ধতিতে আদা আবাদ কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। তাই প্রতিদিনই কৃষি উদ্যোক্তারা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে এসে চাষ পদ্ধতি শিখছে। আগামীতে নিজেরও অব্যবহৃত জমিতে আদা চাষ করবে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেহানা পারভীন জানান, বস্তা পদ্ধতিতে আদা আবাদে আলাদা করে জমির প্রয়োজন হয় না। গাছের নিচে বস্তা অথবা নেট পদ্ধতিতে আবাদ করা যায়। এ বছর একজন কৃষি উদ্যোক্তা পরীক্ষামূলক আদা আবাদ করেছেন। প্রতিনিয়ত তার আদা বাগানে
গিয়ে চাষীদেরকে পরামর্শ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এ আবাদ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় আগামীতে এ উপজেলায় আদা আবাদে অন্যান্য কৃষি উদ্যোক্তারাও আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
সারাবাংলা/এনজে