আইএমএফ’র চতুর্থ কিস্তির অর্থ আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে পাওয়া যাবে : অর্থ উপদেষ্টা
৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৮ | আপডেট: ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩
ঢাকা : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চলমান ঋণ সহায়তার চতুর্থ কিস্তির ১০০ কোটি ডলার আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। ঢাকা সফররত আইএমএফের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি সরকারের শীর্ষ পর্যায়, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এটা একটি রিভিউ মিশন। তারা এখানে থাকবে কিছু দিন। ওরা এসেছে মেইলি রেভিনিউ সেক্টরটা দেখার জন্য। সেই সঙ্গে ফিসক্যাল ডেফিসিট, বাজেটের কী টার্গেট হবে, গ্রোথ, ইনফ্লেশন- এগুলো দেখার জন্য। কী কী পদক্ষেপ আমরা এ পর্যন্ত নিয়েছি এবং কী কী নেবো, সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলাপ করবে ব্যাংক খাতের সংস্কার নিয়ে। তারা কতগুলো লক্ষ্যমাত্রা দেবে সেটা আমরা পূরণ করতে পারবো কি না সেটা অন্য ব্যাপার। কিন্তু আমি আশা করি তারা বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য সহায়তা দেবে।
তিনি বলেন, আমরা তাদের বলেছি আমরা এমন কিছু নেবো যেটা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়। আমরা এমন কিছু নেবো না যেটা নিজের….। যাতে আগামী সরকারে যেই আসুক তারা যেন সেটা ফলো করে আমরা কতটুকু নেবো এবং সেটা বিবেচনা করে ভেবে চিন্তে নেবে।
অতিরিক্ত ফান্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত ফান্ডের বিষয়ে আমরা আবার আলোচনা করে বলবো। চলমান ৪৭০ কোটি ডলার তো প্রথম প্যাকেজের। কিন্তু সংস্কার করতে হলে তো আমাদের ফান্ড লাগবে। আমাদের অনেক কিছু সংস্কার করতে হচ্ছে যেমন- ব্যাংক খাত, রাজস্ব খাত। এগুলো করতে ফান্ড লাগবে।
চলমান ঋণ সহায়তার আওতায় ৪৭০ কোটি ডলারের মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে চতুর্থ কিস্তির অর্থসহ মোট ৩০০ কোটি ডলার চলে আসবে। বাকি যেটা সেটাতো ২০২৬ পর্যন্ত যাবে না, তখন কী করা হবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আইএমএফ আগামী মার্চে আবার আসবে। ১১০ কোটি ডলার তো ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে চলে আসবে। এর পরেরটার জন্য মার্চ মাসে রিভিউতে আসবে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।
তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফের পর্ষদ সভায় যে কথা বলে আসছি সেখানে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে চলতি অর্থবছরের জন্য ছয় বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা প্রত্যাশা করছি। আমরা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, ওপেক ফান্ড- সব মিলিয়ে ছয় বিলিয়ন ডলারের আশা। সেখান থেকে পাবো কত সেটা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো সঙ্গে কথা হচ্ছে। কিছু দিন পর এডিবি আসবে, ওপেক ফান্ডের টাকা আসবে। সব মিলিয়ে আগামী জুনের মধ্যে ৬০০ কোটি ডলার পাবো।
শ্বেতপত্র আইএমএফ’র সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
প্রসঙ্গক্রমে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের স্থিতিশীলতা কিন্তু ফিরে আসছে। সম্পূর্ণ আসেনি, তবে এখন সময় বিনিয়োগের। আপনারা দেখবেন ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট আগের মতো ওঠানামা করছে না। ব্যাংক খাতের মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের লিকুইডি সাপোর্ট লাগছে। তবে ইসলামী ব্যাংকের মতো বড় ব্যাংকে কিছুটা ফিরে আসছে। ইসলাসী ব্যাংক সব বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংক। অন্যান্য ব্যাংকেও আস্তে আস্তে ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, রেমিট্যান্স খুবই ভালো। রপ্তানিও হচ্ছে ভালো, আমদানি একটু কম আছে। তবে আগের থেকে একটু বেড়েছে। মূলধনী যন্ত্রপাতি কিছু কম আসছে, সেটা কিছু রেস্ট্রিকশেনের কারণে। সেটা আমরা চিন্তা করছি কী করা যায়।
সারাবাংলা/আরএস