মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় কমছে জয়িতা ফাউন্ডেশন প্রকল্পে
৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:০১
ঢাকা : ধীর গতি বিরাজ করছে ‘জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বিনির্মাণ’ প্রকল্পে। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের অগ্রগতি গত জুন পর্যন্ত মাত্র ৪৪ শতাংশ। এ অবস্থায় বাস্তবায়কারী সংস্থার পক্ষ থেকে প্রকল্পটির ব্যয় ২৫ কোটি ২১ লাখ ৫৭ হাজার টাকার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এদিকে ব্যয় কমানোর কথা বলা হলেও প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবটির বিষয়ে আগামী রোববার (৯ ডিসেম্বর) প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা ডেকেছে পরিকল্পনা কমিশন।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২৬২ কোটি ৯৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। ব্যয় কমানো হলে প্রকল্পটির সংশোধিত ব্যয় দাঁড়াবে ২৩৭ কোটি ৭৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে মূল ব্যয় প্রস্তাবের তুলনায় ৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ সাশ্রয় হবে।
অন্যদিকে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় না বড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর অর্থাৎ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এখন দ্বিতীয় সংশোধনীতে আরও দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি অনুমোদিত হলে দুই দফায় প্রকল্পটির মেয়াদ তিন বছর বাড়বে।
প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) মো. আব্দুর রউফ সারাবাংলাকে বলেন, পিইসি সভার আগে বিস্তারিত কিছু বলা যায় না। তবে এটুকু বলতে পারি যে সভায় সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর সুপারিশ দেওয়া হবে।
মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বেশ কিছু নির্মাণ কাজ বাকি থাকায় ও পিডব্লিউডির পক্ষ থেকে টাওয়ারটি জয়িতা ফাউন্ডেশনকে হস্তান্তর না করায় প্রকল্পের অনেক কাজ শেষ করা যায়নি। এ ছাড়াও বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে প্রকল্পের মেয়াদকালের একটি বড় সময় প্রশিক্ষণসহ প্রকল্পের যাবতীয় কাজ বন্ধ ছিল। শুরু থেকে গত জুন পর্যন্ত প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত অগ্রগতি ৪৪ দশমিক ১৩ শতাংশ হওয়ায় বাকি কাজ শেষ করার জন্য ব্যয় ২৫ কোটি ২১ লাখ টাকা কমিয়ে ও খাতভিত্তিক সমন্বয় করে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
অন্যান্যের মধ্যে সার্বিক কৃচ্ছ্রতার অংশ হিসেবে প্রকল্প হতে ভৌত কনটিনজেন্সি ও প্রাইস কনসালট্যান্সিত অর্থ বাদ দিয়ে প্রকল্প ব্যয় কমানোর কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় নিরুসাহিত করার নীতি অনুসরণ করে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ব্যয় প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরি করে তাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য নারী উদ্যোক্তাদের অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। সেই অনুযায়ী শিক্ষণ বাজেট পুনঃউপযোজন করা হয়েছে।
দ্বিতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে বলা হয়, দেশের নারী সমাজের ব্যবসা বাণিজ্য অংশগ্রহণ বাড়াতে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা সেবা দেওয়ার জন্য দায়বদ্ধ জয়িতা ফাউন্ডেশন। বর্তমানে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা আয়বর্ধক বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এ কারণেই শিক্ষিত নারী সমাজের মধ্যে সম্মানজনক জীবিকায়ন ও কর্মসংস্থান বা আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ অবরিত করার অবকাশ রয়েছে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, ব্যবসা অঙ্গনে নারীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা এবং নারীর প্রয়োজন ও চাহিদার প্রতি সংবেদনশীল একটি সমান্তরাল বাজার ব্যবস্থা পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী তৈরি করা আবশ্যক। জয়িতা ফাউন্ডেশনের মূল দায়িত্ব হলো নারীদের জন্য দেশব্যাপী বাজার ব্যবস্থাপনা তৈরি ও লালন-পালন করা, যেখানে নারীরা তাদের নিজস্ব পণ্য ও সেবাগুলো প্রদর্শনীর এবং বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারবে। সংস্থাটি জয়িতা নামে একটি অনন্য ব্র্যান্ড মান তৈরির অবিরাম প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে, যার আওতায় সারা দেশব্যাপী নারী পরিচালিত সব ব্যবসা সংগঠিতা ও প্রতিপালিত হবে।
সারাবাংলা/জেজে/আরএস