Sunday 15 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ গণহত্যার শামিল: অ্যামনেস্টি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:২৫ | আপডেট: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:২৩

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষ। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে গণহত্যার অপরাধ হিসাবে বিবেচিত, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।

প্রথমবারের মতো কোনো বড় মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

৩২ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনটিতে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত গাজায় সংঘটিত ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসরায়েল অমানবিকভাবে অবিরাম এবং সম্পূর্ণ দায়মুক্তির সঙ্গে গাজায় ২৩ লাখ মানুষের জীবনকে নরকসাদৃশ করে তুলেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণ যুদ্ধের সূত্রপাত করলেও, এটি গণহত্যাকে ন্যায়সঙ্গত করে না বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েল গণহত্যা কনভেনশনের অধীনে নিষিদ্ধ কাজগুলো করেছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যাকাণ্ড, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি এবং গাজায় এমন অমানবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্র তৈরি করা যা সেখানকার মানুষের শারীরিক ধ্বংস নিশ্চিত করতে পারে। ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডকে ‘গাজায় ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করার ইচ্ছাকৃত প্রয়াস’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন- গাজায় ইসরায়েলের নীতি গণহত্যার সঙ্গে সম্পর্কিত: জাতিসংঘ

অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বুধবার (৪ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের এই প্রতিবেদন সতর্ক সংকেত হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করছি। এটি গণহত্যা এবং এটি এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।’

প্রতিবেদনের প্রধান অভিযোগ:

১. সামরিক অভিযানের নজিরবিহীন মাত্রা ও ধ্বংসের বিস্তৃতি, যা ২১তম শতাব্দীর অন্য কোনো সংঘর্ষে দেখা যায়নি।
২. সাধারণ নাগরিক ও বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর সরাসরি হামলা বা নির্বিচার হামলার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিসাধন করেছে।
৩. মানবিক সহায়তা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত করা এবং বসবাসের অনুপযুক্ত অবস্থার সৃষ্টি করা।
৪. জল, স্যানিটেশন, খাদ্য এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ধ্বংস, যা গাজার জনগণের জন্য জীবনধারণ অসম্ভব করে তুলেছে।

বিজ্ঞাপন

অ্যামনেস্টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা জাতিসংঘকে ইসরায়েলি এবং হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে লক্ষ্যভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সুপারিশ করেছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানির মতো দেশগুলোকে ইসরায়েলকে নিরাপত্তা সহায়তা ও অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

 আরও পড়ুন- ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ

প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইসরায়েল প্রতিবেদনটিকে প্রত্যাখ্যান করা এবং এটিকে বিরোধিতার আড়ালে ইহুদি বিদ্বেষ বলে উল্লেখ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে অ্যামনেস্টি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে বর্ণবৈষম্যের সঙ্গে তুলনা করে একটি বড় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, যা বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল।

সারাবাংলা/এনজে

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইসরায়েলি হামলা গণহত্যা গাঁজা প্রতিবেদন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর