তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে রিটের রায় ১৭ ডিসেম্বর

ঢাকা: তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন প্রশ্নে দায়ের করা রিটের রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১৭ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। এরই মধ্যে এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন। এ সংক্রান্ত পৃথক রিটের ওপর গতকাল বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দ্বাদশ দিনে শুনানি শেষ হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এর গেজেট প্রকাশ করা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পাশাপাশি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়।

পাশাপাশি অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বিধানও সংযোজন করা হয়।

রিটের রুল শুনানিতে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

শুনানিতে ইনসানিয়াত বিপ্লব দলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুর রউফ ও ইশরাত হাসান। এ ছাড়া রুল শুনানিতে পক্ষভুক্ত হওয়া সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন আইনজীবীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের করা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

ওই রুলে ইন্টারভেনার (আদালতকে সহায়তা করতে) হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), গণফোরাম ও জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকজন ব্যক্তি ও কয়েকটি সংস্থা যুক্ত হয়। শুনানিতে রিট আবেদনকারী, বিএনপি, রাষ্ট্রপক্ষ, জামায়াত, গণফোরাম, ব্যক্তি ও সংস্থার পক্ষে তাদের আইনজীবীরা শুনানিতে নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন।

এদিকে গত অক্টোবরে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ১৭টি ধারার বৈধতা নিয়ে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি রিট আবেদন করেন। এই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৯ অক্টোবর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রুল দেন। রুলে আইনের ওই ধারাগুলো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুলের ওপরও শুনানি হয়।

সারাবাংলা/টিআর

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধান হাইকোর্ট