সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দখলে হামা শহর
৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:১৫ | আপডেট: ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৩১
সিরিয়ার প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠী দেশটির চতুর্থ বৃহত্তম শহর হামা’র পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। শহরটি বিদ্রোহীরা মাত্র আট দিনের একটি দ্রুত অভিযানের মাধ্যমে তাদের দখলে নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জন্য এটি একটি বড় আঘাত।
সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) তীব্র লড়াইয়ের পর বিদ্রোহীরা হামায় প্রবেশ করে, যার ফলে সেনা ইউনিটগুলো শহর ছেড়ে সরে যায়। সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, নাগরিকদের জীবন রক্ষা এবং শহুরে যুদ্ধ এড়াতে তাদের বাহিনী পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এর নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি জানিয়েছেন, ‘বিদ্রোহীরা হামার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
বিদ্রোহীরা শহরের সামরিক বিমানবন্দরও দখল করেছে, যা সিরিয়ার অন্যতম বৃহৎ এবং সরকারপন্থি বাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ছিল।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার তথ্যানুযায়ী, ২৭ নভেম্বর থেকে বিদ্রোহীরা উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চল থেকে দক্ষিণ দিকে অভিযান শুরু করে। তারা প্রথমে আলেপ্পো দখল করে এবং এরপর ৩ ডিসেম্বর হামার উত্তরের একটি কৌশলগত পাহাড়ি এলাকা দখল করে শহরের পূর্ব ও পশ্চিম দিক দিয়ে অগ্রসর হয়।
ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট গেইস্ট পিনফোল্ড বলেছেন, বিদ্রোহীরা যদি হামা ধরে রাখতে পারে, তবে এর কৌশলগত তাৎপর্য রয়েছে। হামা সুন্নি সশস্ত্র প্রতিরোধের জন্মস্থান যা বাশার আল-আসাদ এবং তার পিতার বাথ পার্টির বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল।
হামার দখল বিদ্রোহীদের হোমস এবং দামেস্কের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথ খুলে দেবে। হোমস কেন্দ্রীয় সিরিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং প্রধান জনবহুল অঞ্চলগুলোর সংযোগস্থল।
হামা প্রদেশ লাতাকিয়া উপকূলীয় অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত, যা আল-আসাদের সমর্থনের একটি প্রধান ঘাঁটি। শহরটির কাছাকাছি রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুটি বড় শহর মুরদা (খ্রিস্টান অধ্যুষিত) এবং সালামিয়া (ইসমাইলি মুসলিম অধ্যুষিত)।
রাশিয়া এবং ইরানের সমর্থনে আল-আসাদ পূর্বে বেশিরভাগ ভূখণ্ড পুনর্দখল করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যস্ত এবং হিজবুল্লাহর অনেক নেতা সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন, যা তাদের শক্তি দুর্বল করেছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘আমরা সিরিয়ার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং আমাদের সিরীয় বন্ধুদের সঙ্গে ক্রমাগত সংলাপে রয়েছি।’
সামরিক বিশ্লেষক স্যামুয়েল রামানি বলেন, ‘হোমসের নিয়ন্ত্রণ চলে গেলে দামেস্ক সরাসরি হুমকির মুখে পড়বে।’ তবে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও সিরিয়ার পক্ষে দ্রুত পাল্টা আক্রমণ চালানো কঠিন হবে।’
সারাবাংলা/এনজে