ঢাকা : বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, গত সরকারের সময় জাতীয় সংসদে অনেকে ব্যবসায়ী ছিলেন। ফলে তারা নীতিনির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করেছেন। এজন্য সংসদ থেকে শুরু করে জেলা উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত একটি ক্রনিক ক্যাপিটালিজম তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে চামচা পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটায় বিগত সরকারের মধ্যে অগতান্ত্রিক মনোভাব তৈরি হয়েছে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) চারদিনব্যাপী বার্ষিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘এজেন্ডা ফর ইকোনমিস অ্যান্ড সোশ্যাল রিফর্ম’ শীর্ষক পাবলিক লেকচার প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন। বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। রাজধানীর একটি হোটেলে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব নিয়ে সন্দেহ থাকলেও, দারিদ্রতা কমানোর সূচকে বাংলাদেশ ভাল করেছে। এটা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। এছাড়া স্যানিটেশন সুবিধা বৃদ্ধি, মাতৃমৃত্যু কমানো, শিশু মাতৃহার কমানোসহ সামাজিক সূচকগুলোতেও অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করা না গেলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে না। আমাদের রফতানি খাত শুধু পোশাক নির্ভর হলে চলবে না। রফতানিতে বৈচিত্রায়ন আনতে হবে। আমাদের নির্মাণ শিল্প ও সিরামিক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পগুলো যখন বাজার কাজ করে না তখন রাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। কিন্তু এখানে রাষ্ট্রই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।
বৈষম্য দূরীকরণ প্রসঙ্গে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, আমি সারাবাজীন বৈষম্য বিরোধী কথা বলে গেলাম, কিন্তু উন্নতি কতটা হয়েছে- সেটি বড় প্রশ্ন। আমাদের দেশে আঞ্চলিক বৈষম্য আছে। বিশেষ করে রংপুর অঞ্চলে এ বৈষম্য অনেক বেশি। কিন্তু ঢাকা ও চট্টগ্রামে তেমন বৈষম্য নেই।
বৈষম্য প্রসঙ্গে একটি স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমি যখন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলাম- প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায়, তখন একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় আমার গাড়ীর স্টার্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারপর গাড়িটি ঠেলে নিতে হয়েছিল। আর এখন যারা পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য তাদের গাড়ীতে এসি লাগে। এমনকি কোটি টাকা দামী ব্র্যান্ডের গাড়ীও ব্যবহার হয়।