‘পতিত স্বৈরাচার আবার ক্ষমতা দখলের দিবাস্বপ্ন দেখছে’
৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৪২ | আপডেট: ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৪৭
ঢাকা: পতিত স্বৈরাচার আবার ক্ষমতা দখলের দিবাস্বপ্ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনে উগ্রবাদী হিন্দুদের হামলা এবং ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ‘ভয়েস অব টাইমস’ নামক একটি সংগঠন এ সমাবেশ আয়োজন করে।
ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুধুমাত্র ওই চিন্ময়ের জন্য, তা নয়। এই ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। কেউ কেউ হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করে- বাংলাদেশের চিকেন নেক দখল করে নেবে।”
‘‘আরে ভাই দখলের দিন শেষ। বুঝতে হবে, এত বাহিনী থাকার পরও পালিয়ে যেতে হয়েছে। ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত থাকার পরও দখলের স্বপ্ন দেখেন, সেটা দিবাস্বপ্ন থেকে যাবে। ৩৬ কোটি হাত প্রতিরোধ করবে। আধিপত্যবাদী-সম্প্রসারণবাদী যেকোনো উদ্যোগকে এ সরকারই শুধু নয়, এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করবে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা তাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার জন্য শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে চেষ্টা করবে’’— বলেন এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা আজকে শুধু প্রতিবাদ জানাচ্ছি, এইটুকুই না। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ষড়যন্ত্র দেশের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলছে, ষড়যন্ত্র শেষ হয় নাই। কোনো অবস্থাতে ভাবার কারণ নাই আপনার অধিকার আপনি এমনি এমনি ফেরত পাবেন।”
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘যেরকমভাবে তারেক রহমান বলেছেন, আন্দোলনে ছিলাম, আন্দোলনে আছি, এবং থাকব। আগামী দিনের লড়াই হবে আরও কঠিন। দেখেন, আস্তে আস্তে আমাদের সামনে কঠিন সময় আসছে। এ সময় দরকার ঐক্য। শুধু ঐক্যই পারে যেকোনো ষড়যন্ত্রকে ছিন্ন করতে এবং সম্প্রসারণবাদী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিরোধ করতে।”
তিনি বলেন, ‘‘আগের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমএ মোমেন দিল্লীতে গিয়ে বলেছিলেন, আমাদেরকে আরেকবার ক্ষমতায় রাখেন। তারা জনগণকে বলে না, জনগণের ভোটে তারা বিশ্বাস করে না। সেজন্যই ‘১৪, ‘১৮ ও ’২৪ এ নির্বাচন কী হয়েছে- তা দেশের মানুষ দেখেছে। মানুষ ভোট কেন্দ্রে যায় নাই।’’
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘তাদের (ভারত) দেশের কয়েক লাখ মানুষ এই দেশে। আমাদের দেশের যুবকরা চাকরি পায় না, আর তারা ৫ বিলিয়ন ডলার প্রতিবছর আমাদের দেশ থেকে ব্যাংকের মাধ্যমেই পাঠায়। আর ব্যাংকের বাইরে হুন্ডির মাধ্যমে যা পাঠায় তা ধরলে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রতিবছর তারা বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়াতে রেমিট করে।”
তিনি বলেন, ‘‘তারা আমাদের সাথে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারে বাণিজ্য করে। আমাদের দেশে যখন পেঁয়াজের দাম বাড়ে, তখন তারা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে। আমাদের দেশের মানুষের যখন পানি দরকার, তখন পানি বাঁধ বেঁধে দেয়, পানি দেয় না। তারা শুস্ক মৌসুমে আমাদেরকে পানি দেয় না, আর বর্ষাকালে পানি ছেড়ে দিয়ে কষ্ট দেয়। তারা আমাদেরকে এভাবে শোষণ করতে চায়, নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।”
ভয়েস অব টাইমসের সভাপতি ফারুকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমীর হেলাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/এজেড/আরএস