শীতের আগমনীতে পর্যটকে মুখর রাঙ্গামাটি
৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭ | আপডেট: ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:৩০
রাঙ্গামাটি: শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি জেলা রাঙ্গামাটি পর্যটক মুখর হয়ে উঠেছে। শহুরে যান্ত্রিকতার কোলাহল ভুলে প্রকৃতির কোলে সময় কাটাতে হ্রদ পাহাড়ের শহর রাঙ্গামাটিতে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। এবারের শীত মৌসুমে আশানুরূপ পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশাবাদী খাতসংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ‘সিম্বল অব রাঙ্গামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতু ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকে মুখরিত হয়ে উঠেছে ঝুলন্ত সেতুটি। বছরের শেষদিকে পরিবার, প্রিয়জন ও আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ঘুরতে এসে ঝুলন্ত সেতুতে ছবি তুলছেন। আবার অনেকে কাপ্তাই হ্রদে ইঞ্জিনচালিত বোটে করে ভেসে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে, ঝুলন্ত সেতু ছাড়াও সুবলং ঝরনা, ডিসি বাংলো, পলওয়েল পার্ক, রাজবাড়ি, কাপ্তাই হ্রদ, আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কসহ ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা নীলাঞ্জনা রিসোর্ট, বেরান্ন্য লেক, ইজোর, রাইন্যাটুগুন ইকো রিসোর্টসহ দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর পর্যটনস্পটগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক নাঈম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম বার রাঙ্গামাটিতে আসা। এই প্রথম পাহাড় দেখলাম, হ্রদ পাহাড়ের মিতালী যে এত মুগ্ধকর তা আমার জানা ছিল না। প্রকৃতি যে কতটা সুন্দর ও স্নিগ্ধ হতে পারে, তা এখানে না এলে কেউ বুঝতে পারবে না।’
ফেনী থেকে আসা হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বন্ধুরা মিলে বছরের শেষে ও শীতের শুরুতে রাঙ্গামাটি বেড়াতে এসেছি। রাঙ্গামাটির সৌন্দর্য দেখে খুব ভালো লাগছে। আগে সহিংসতার ঘটনার কারণে প্রশাসন পর্যটকদের ভ্রমন বন্ধ করে দিয়েছিল। এবারে যেহেতু সবকিছু ঠিক রয়েছে সে কারণে আমরাও ভালো করে ঘুরাঘুরি করতে পারতেছি। পাহাড় প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’
পর্যটন নৌ-যান ঘাটের লাইনম্যান মো. ফখরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটক না আসাতে আমাদের বোটচালক ও মালিকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবারে যেহেতু কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, অন্যদিকে শীতের মৌসুমও চলে এসেছে, সেহেতু পর্যটকরাও আসা শুরু করতেছে। এভাবে যদি সামনের দিনগুলোওতে পর্যটক আসে তাহলে মোটামুটি ব্যস্ততায় সময় পার হবে এবং আমাদের ব্যবসাও ভালো চলবে।’
রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক অলোক বিকাশ চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটক আসা কমে গেলেও বর্তমানে ভরা মৌসুমে পর্যটকের আগমন শুরু হয়েছে। বর্তমানে আমাদের ৬০ শতাংশ বুকিং রয়েছে। যেভাবে পর্যটক আসছে এটার ধারাবাহিকতা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আরও পর্যটকের আগমন ঘটবে। এতে আমরাও ভালো রাজস্ব আয় করতে পারব।’
অন্যদিকে, মেঘের রাজ্যখ্যাত রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালি উপত্যকাও এখন পর্যটকদের ভারে মুখরিত। মেঘ পাহাড়ের মিতালী, সৌন্দর্য দেখতে সাজেকে ছুটছেন পর্যটকরা।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মতিজয় ত্রিপুরা সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে জানান, সাজেক এখন পর্যটকের মুখর। আগের চেয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি ঠিক থাকায় পর্যটকের আগমন বাড়ছে। সাজেকের বেশির ভাগ কটেজ, রিসোর্টের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বুকিং রয়েছে।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য দিনের চেয়ে বিশেষ করে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার সাজেকে পর্যটকের চাপ বেশি থাকে। সামনের দিনগুলো পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আরও ব্যাপক সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটবে বলে আশা করছি।
সারাবাংলা/পিটিএম