ঢাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে স্কলারশিপ জালিয়াতির অভিযোগ
১৩ জুন ২০১৮ ২০:০০
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: তথ্য গোপন করে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত’ দেখিয়ে বিদেশের বৃত্তির সুযোগ করে দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের এক অধ্যাপক- এমন অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যের কাছে চিঠি দিয়েছেন বিভাগের চেয়ারপারসন।
ইতোমধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইমদাদুল হককে দায়িত্ব দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
তথ্য গোপনের অভিযোগ আসা ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক ড. শাহীন ইসলাম। চিঠিতে তার এই কাণ্ডকে ‘নীতিবহির্ভূত’ হিসেবে অখ্যায়িত করেছেন অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম। গত ১৫ মে উপাচার্যকে দেওয়া চিঠিতে ওই শিক্ষকের ৩টি নিয়মভঙ্গের বিষয়ে বর্ণনা দিয়ে বলা হয়, অধ্যাপক শাহীন ইসলাম তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ‘হিল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’র সাব প্রজেক্ট ম্যানেজার মোস্তাক আহমেদ ইমরানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দেখিয়ে একটি স্কলারশিপ দিয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য নিয়ম বহির্ভূতভাবে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। অরফান ট্রাস্ট-এর প্রতিনিধি মিনা মরিসের পাঠানো ই-মেইল অনুযায়ী ‘দ্য অরফান ট্রাস্ট অ্যান্ড হোয়াইট ল্যান্ডস প্লে থেরাপি স্কলারশিপ’-এ আবেদনের জন্য প্রথম শর্ত হচ্ছে আবেদনকারীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত হতে হবে। দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত থেকে ৩ বছর প্লে থেরাপির প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কিন্তু শাহীন ইসলাম যে আবেদনকারীকে সুপারিশ করে পাঠিয়েছেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত নন এবং কখনো ছিলেন না। তবে তিনি ২০১৪-২০১৫ সেশনের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন।
শাহীন ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়ে উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগপত্র নিয়ে অধ্যাপক মেহতাব খানম আমার কাছে এসেছিলেন। জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিনকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। তিনি বেশ কিছু দিন দেশে ছিলেন না, এখন দেশে এসেছেন। তিনি এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।
অভিযোগপত্রে ড. মেহতাব খানম আরো বলেন, মোস্তাক আহমেদ ইমরানকে যখন স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত করা হয়, তখন বিভাগের চেয়ারপারসন হিসেবে আমি দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু শাহীন ইসলাম বিভাগীয় প্রধান ও একাডেমিক কমিটিকে উপক্ষো করে এবং বিষয়টি গোপন রেখে অরফান ট্রাস্ট এবং রোহাম্পটন ইউনিভার্সিটির হোয়াইটস ল্যান্ড গিল্ড-এর সঙ্গে বিভাগীয় পরিচয় উল্লেখ না করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যা তার এখতিয়ারবহির্ভূত। তাই অধ্যাপক শাহীন ইসলামের নীতিবহির্ভূত আচরণের কোনো দায়ভার একাডেমিক কমিটি নেবে না।
ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশ ও বহির্বিশ্বের কাছে কলঙ্কিত করতে না পারেন সে জন্য অধ্যাপক শাহীন ইসলামের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য একাডেমিক কমিটির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করেন মেহতাব খানম।
তবে এ বিষয়ে শাহীন ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
সারাবাংলা/এমআইএস/এটি
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook