মঙ্গলবার ভ্যাট দিবস, পালন হবে ভ্যাট সপ্তাহ
৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৩১ | আপডেট: ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৫
ঢাকা: প্রতিবছরের মতো এবারও মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ভ্যাট দিবস পালন করা হবে। আর ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পালিত হবে ভ্যাট সপ্তাহ। এবারের ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ভ্যাট দিব জনে জনে, অংশ নিব উন্নয়নে’।
ভ্যাট সিস্টেমকে সামগ্রিকভাবে অনলাইন ভিত্তিক করে ঘরে বসে সকল ভ্যাট সেবা প্রদানের জন্য একটি রোবাস্ট ভ্যাট সিস্টেম নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, জনগণকে স্বস্তি দিতে এবার ব্যাপকভাবে কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজস্ব আদায় কমেছে। বাজার পরিস্থিতি সহনীয় হলে আবার ভ্যাট নেওয়া হবে ছাড় দেওয়া পণ্যগুলোতে। তিনি বলেন, ‘ভ্যাট নিবন্ধিত করদাতা মাত্র ৫ লাখের কিছু বেশি। এটা অত্যন্ত কম। ভ্যাট নিবন্ধন অনেক সহজ। ভ্যাট অনলাইনেই নেওয়া যায়। রিটার্নও অনলাইনে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকল ব্যবসায়ীকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। এটি দ্রুতই করব। তাহলে রাজস্ব ঘাটতি কমবে।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রত্যেক কর্মকর্তাকে সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে হবে। এছাড়া ন্যায্য কর আদায় করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনস্বার্থে অনেক কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এতে আয় কমছে। ছাড় কমানোর কোনো বিকল্প নেই। এটা এক ধরনের বৈষম্য। ছাড় দেশের প্রয়োজনে, পরিস্থিতি ভাল হলে ছাড় কমানো হবে। ব্যবসায়ীদের আস্থায় এনে কাজ করতে হবে। ভ্যাটের হার একটা হলে ভাল হয়, ফাঁকি কমে। আলোচনা করেই ছাড় কমানো হবে।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এবারের ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘ভ্যাট দিব জনে জনে, অংশ নিব উন্নয়নে’। এ স্লোগানে মূলত ভ্যাট প্রদানে জনগণের ব্যাপকভিত্তিক অংশগ্রহণ ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের অবদানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সর্বস্তরের জনগণের ভ্যাট প্রদান ও দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণ এ স্লোগানের মূল উপজীব্য। এই স্লোগান এ বিষয়টিও ব্যক্ত করে যে ভ্যাট একটি ব্যাপকভিত্তিক কর ব্যবস্থা।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, আমদানি পর্যায়ে আহরিত রাজস্ব ছিল সরকারের রাজস্বের মূল ভিত্তি কিন্তু বর্তমানে মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থা রাজস্ব খাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। মূল্য সংযোজন কর আদায় উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাগুজে পদ্ধতি থেকে ক্রমান্বয়ে আমরা অনলাইন পদ্ধতি অবলম্বন করছি। মূসক নিবন্ধন, দাখিলপত্র প্রদান ও ভ্যাট পরিশোধের পদ্ধতি সহজিকরণের পাশাপাশি অংশীজনদের উৎসাহিতকরণ ও সকল পর্যায়ের কর্মপদ্ধতিতে অটোমেশন প্রবর্তনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মূসক নিবন্ধন, দাখিলপত্র প্রদান ও ভ্যাট পরিশোধ ব্যবস্থা অটোমেটেড হয়েছে। একটি নিশ্চিদ্র ভ্যাট ব্যবস্থা নির্মাণের জন্য বর্তমানে আমরা ই-ইনভয়েস ব্যবস্থা প্রচলন করার চেষ্টা করছি।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ভোক্তা সাধারণের সুবিধার্থে বিভিন্ন প্রকার অব্যাহতি প্রদান, চলমান বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী যেমন, চিনি, ডিম, আলু ও ভোজ্য তেল এ মূসকের হার হ্রাসকরণ, হজ্ব যাত্রীদের টিকিটের উপর আবগারী শুল্ক প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের সর্বস্তরের ভোক্তা, ব্যবসায়ী, শিল্প মালিকগণকে সম্পৃক্ত করে যুগোপযোগী সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি ও একটি শক্তিশালী কর সংস্কৃতি বিনির্মাণে এবং সর্বোপরি বৈষম্যহীন স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মাণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বদ্ধপরিকর।
লিখিত বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছরেও একইভাবে ‘ভ্যাট দিবস’ এবং ‘ভ্যাট সপ্তাহ’ উদযাপন করা হচ্ছে। অংশীজনদের ব্যাপক অংশগ্রহণের ওপর ভ্যাট ব্যবস্থার সফলতা নির্ভর করে। আশা করা যায়, এসকল প্রচারণামূলক কার্যক্রম দেশে কর সংস্কৃতি নির্মাণে যথেষ্ট সহায়ক হবে যা উত্তরোত্তর ভ্যাট আদায় বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। এর ধারাবাহিকতায় সম্পন্ন হবে কাঙ্খিত উন্নয়ন। আমরা একটি সুখী, সুন্দর সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হব।’
সারাবাংলা/ইএইচটি/এইচআই