Monday 09 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিআইডিএস’র গবেষণা
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা দেশের অর্থনীতিতে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৯ | আপডেট: ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:২৯

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)

ঢাকা: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে আর্ন্তজাতিক বাজারে বেশকিছু পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারও অস্থির হয়েছে। এর মধ্যে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ, ইউরিয়া সার এবং খাদ্য পণ্যের দামও বেড়েছে। এ কারণে দেশের মূল্যস্ফীতিও ঊর্ধ্বমুখী।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনের তৃতীয় দিন সোমবার (৯ ডিসেম্বর) একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপনের সময় এসব কথা বলা হয়েছে। ‘ইমপ্যাক্টস অব রাশিয়া-ইউক্রেন অয়্যার প্রাইস সকস অব দ্য বাংলাদেশ ইকোনমিক: সিম্যুলেশন ভিএস রিয়েলিটি’ গবেষণাটি উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের রিসার্স ফেলো তারিন তারিমা চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মনীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। গবেষণা সহযোগী ছিলেন- ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের রিসার্স ফেলো পাওয়েল এ ডোরেস, অ্যাঞ্জেন প্যারাদিসা এবং বিআইডিএসের রিসার্স ফেলো রেজোয়ানা ইসলাম।

গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, পেট্রোলিয়াম পণ্যের অভ্যন্তরীণ মূল্য ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সময় খুব বেশি ওঠানামা হয়নি। ফলে বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ান করপোশেন) কোনো ক্ষতি বা লাভ লাভ করেনি। ২০২০ সালে অপরিশোধিত তেলের দাম কমে যাওয়ায়, পেট্রোলিয়াম উৎপাদনের খরচ বিক্রয় মূল্যের চেয়ে কম হওয়ায় সম্ভাব্যভাবে মুনাফা অর্জন করছিল বিপিসি। পেট্রোলিয়ামের দাম শুধুমাত্র ২০২১ সালের জুলাই মাসে বাড়ানো হয়েছিল। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক মাস পরে ২০২২ সালের জুলাইয়ে আরও বাড়ে। আমদানি মূল্য তীব্র বৃদ্ধি সত্ত্বেও অভ্যন্তরীণ মূল্য তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ানো হয়নি। একই বছরের জানুয়ারি-জুন পেট্রোলিয়াম উৎপাদন খরচ বিক্রয় মূল্যের চেয়ে বেশি হওয়ায় লোকসান ছিল বিপিসির। বিপিসি ২০২০ সাল থেকে তার লাভের অর্ধেক (২১০ বিলিয়ন বিডিটি) লোকসানের অর্থায়নে ব্যবহার করেছে ।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, বাংলাদেশে সারের মূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সরকারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। ২০২০ সালের মাঝামাঝি বিশ্ববাজারে ইউরিয়া ও ডিএপির দাম বাড়লেও অভ্যন্তরীণ দর স্থির ছিল। এটি অভ্যন্তরীণ এবং আর্ন্তজাতিক দামের মধ্যে বড় ব্যবধান তৈরি করে এবং ২০২২ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে থাকে। কিন্তু, ইউরিয়ার দামের ব্যবধান কমতে শুরু করে ২০২২ সালের জুলাই মাসে যখন বিশ্ব দাম বাড়তে শুরু হয়েছিল।

সময়ের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ইউরিয়ার দাম বজায় রাখার জন্য বড় ভর্তুকি দিয়ে সরকারের ওপর বোঝা তৈরি করে। ২০২২ সালের জুলাইয়ে সরকার ভর্তুকি খরচ কমাতে ইউরিয়ার দাম বাড়িয়ে ২০ দশমিক ৫ টাকা করে। কিন্তু, এই একই সময়ে ইউরিয়ার আন্তর্জাতিক মূল্য প্রতি কেজি ৬৫ দশমিক ২ টাকায় নেমে আসে। যা অভ্যন্তরীণ মূল্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মূল্যের অনুপাতকে ০ দশমিক ২৭-এ ঠেলে দেয়। সরকার ২০২২ সালে ৪০ বিলিয়ন টাকা সার ভর্তুকি দিয়েছে।

এদিকে, ২০২২ সালের মে থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ার পরও চাল, ভুট্টা, ভোজ্য তেলের অভ্যন্তরীণ মূল্যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম ক্রমাগত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গমের অভ্যন্তরীণ মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়।

সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর