‘বৈষম্য নিরসনে সবার নগরসেবার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে’
১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:২২ | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:২৫
ঢাকা: মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার আলোকে নগরের বৈষম্য নিরসনে সকলের নগরসেবা প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও নগরের দরিদ্র নাগরিক হিসেবে মর্যাদা ও রাষ্ট্রের সেবা থেকে বঞ্চিত। অথচ তারাই নগরের চালিকাশক্তি। নগরের পথবাসী, ঝুঁপড়িবাসী, বস্তিবাসী, দলিত, তেলেগু ও হরিজন সম্প্রদায়সহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা সরকার ও জনগণকে বিভিন্নভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর রায়ের বাজার বধ্যভূমি প্রাঙ্গনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে কোয়ালিশন ফর আরবার পুয়র (কাপ) ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজিত সামাজিক সমাবেশে এসব কথা বলেন তারা।
কাপের নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার রেবেকা সানইয়াতের সভাপতিত্বে ও মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাসচিব মো. মাহবুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন শহিদ সৈকতের পিতা মাহবুবুর রহমান, আমার বাংলাদেশ পাটির্র আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব, উন্নয়ন গবেষক আমিনুর রসুল, বস্তিবাসী অধিকার ও সুরক্ষা কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি হোসনে আরা বেগম রাফেজা, নগর দরিদ্র যুব ফেডারেশনের নেত্রী হেনা আক্তার রুপা, পথবাসী ও ঝঁপড়িবাসী সংগঠনের নেত্রী ময়না বেগম প্রমুখ।
সমাবেশে নগরের অতি দরিদ্রদের নাগরিক অধিকার ও আর্থসামজিক উন্নয়নে ৭ দফা সুপারিশ তুলে ধরে তা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
তাদের উত্থাপিত ৭ দফা
- নগর গৃহহীন অতি দরিদ্র জনগণের জন্য আবাসন ও বসতি নিশ্চিত করতে হবে।
- পথবাসী ও ঝুঁপড়িবাসীদের নাগরিক পরিচয়পত্র, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
- অতি দরিদ্রদের বৈষম্য নিরসন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে রাষ্ট্রের সামাজিক সুরক্ষা সেবাসহ উন্নয়নমূলক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে।
- দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
- প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো স্থায়ীত্বকরণের মাধ্যমে বিশেষ করে নগর দরিদ্রদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
- বস্তি এলাকায় বর্জ্য অপসারণসহ নগরসেবা নিশ্চিত করতে হবে।
- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহতদের পরিবারের জন্য ন্যায় বিচার ও দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসন এবং যারা আহত তাদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মানুষ হিসেবে আমাদের কিছু অধিকার রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান দেশের সব মানুষকে মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের অধিকার রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে। শহরের দিনমজুর, রিকশাচালক, বস্তিবাসী সকল নিম্ন আয়ের মানুষদের ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানান তারা।
সমাবেশের পূর্বে একটি র্যালি রাজধানীর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকা প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে প্রায় ২ হাজারের বেশি নগরদরিদ্র, পথবাসী ও বস্তিবাসী সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এইচআই