Wednesday 11 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফের আন্দোলনে চারুকলার শিক্ষার্থীরা, সড়ক অবরোধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:২২ | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:৫৯

বাদশা মিয়া সড়কে চারুকলার সামনের সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মূল ক্যম্পাসে ফিরে যাওয়াসহ নানান দাবিতে ফের আন্দোলনে নেমেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে নগরীর বাদশা মিয়া সড়কে ইনস্টিটিউটের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসুচি পালন করছেন তারা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও সড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে, মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

এদিন দুপুর ক্যাম্পাসের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ‘চারুকলা মূল ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তন চাই’ লেখা ব্যানার সড়কে বিছিয়ে শিক্ষার্থীরা নানান স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। দুপুরের পর থেকেই ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

চারুকলা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) থেকে আন্দোলন করছি। সকালে প্রক্টর এসেছিলেন। আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখন আর আমরা কোনো আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বেলা ১২টায় ক্যাম্পাসে যেতে বলেছে। সঙ্গে শিক্ষকদেরও যেতে বলেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি মৌখিক আদেশে আমরা যেতে আগ্রহী না। অতীতেও এমন হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষক গেলেও সবাই যান না। তাই এবার আমাদেরকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। সব শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও বৈঠকে থাকতে হবে। আমরা কেউ যাব বৈঠকে, আবার কেউ ক্লাস করব সেটা হবে না।’

বিজ্ঞাপন
বাদশা মিয়া সড়কে চারুকলার সামনের সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: সারাবাংলা

বাদশা মিয়া সড়কে চারুকলার সামনের সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: সারাবাংলা

ফাহিম বলেন, ‘মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে আমরা গত বছর ১৮২ দিন আন্দোলনে ছিলাম। কিন্তু দাবি না মেনে দমন পীড়নের মাধ্যমে আমাদের আন্দোলন বন্ধ করা হয়েছিল।’

ফাহিমা জান্নাত নামে তৃতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের প্রথম দাবি আমরা মূল ক্যাম্পাস চাই। আমাদের শিক্ষক সংকট আছে। ক্লাস ঠিকভাবে খোলা থাকে না। শিক্ষকরা ক্লাস নেই না। এগুলো দেখার কেউ নেই। সেজন্য আমরা চাই প্রশাসনের কাছাকাছি থাকতে। এর আগেও আমরা আন্দোলনে নেমেছিলাম। আমাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মেরে তুলে দেওয়া হয়েছিল। আমরা এখন আর আন্দোলন শেষ করব না। আমরা শেষ পর্যন্ত থাকব।’

জানতে চাইলে চবির প্রক্টর তানভীর মো. হায়দার আরিফ সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক অফিস বন্ধ রেখেছিল। আমি নিজে সকালে গিয়ে অফিসের তালা খুলেছি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে ভিসি বা প্রোভিসি কেউ তো দ্বিমত করছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্যাম্পাসেই দামি যন্ত্র আছে। কোনো ডিপার্টমেন্ট তো তার নিজের জায়গা আর ছেড়ে দেব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, আমি যাওয়ার কথা সবাই জানতো। কিন্তু আমি কোনো শিক্ষককে সেখানে দেখতে পাইনি। এটা খুব খারাপ লাগল। আমি তাদের বলে এসেছি সব শিক্ষককে আগে বসে একটি সিদ্ধান্তে আসতে। এরপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে। শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া থাকবে এটা স্বাভাবিক। আগামীকাল আমরা একটি বৈঠক ডেকেছি।’

চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহেদুল কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুপুর থেকে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বসে আছে। ওখানে পুলিশ নিয়োজিত আছে। আপাতত ওই সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ আছে।’

নগরীর বাদশা মিয়া সড়কে ‘চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজকে’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সঙ্গে সংযুক্ত করে ২০১০ সালে চারুকলা ইনস্টিটিউট করা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নগরীতে ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।

গত বছরও চারুকলা ইনস্টিটিউট চবির মূল ক্যাম্পাসে ফেরাতে আন্দোলনে নেমেছিলেন শিক্ষার্থীরা। যেটা বড় আন্দোলনে রুপ নেয়। পরে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসলেও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তারা।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

বিজ্ঞাপন

আরও ৪ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৪৪৪
১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:৩৪

আরো

সম্পর্কিত খবর