রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকার বিজিপি-৫ ব্যারাক দখলের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা পশ্চিম সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারিয়েছে। আরাকান আর্মির (এএ) মাসব্যাপী অবরোধ শেষে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে সেনাবাহিনীর ৪৫০ জনেরও বেশি সদস্য নিহত হয়েছে।
বর্ডার গার্ড পুলিশের সদর দপ্তর ছিল বিজিপি-৫ যা, উত্তর রাখাইনে সামরিক বাহিনীর শেষ ঘাঁটি। দীর্ঘদিনের অবরোধ শেষে আরাকান আর্মি গত সপ্তাহে এটি দখল করে। মংডু শহরের কাছে ২০ হেক্টরজুড়ে বিস্তৃত এই ঘাঁটি ছিল ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা গ্রাম মিও থু গির ধ্বংসস্তূপের উপর নির্মিত।
আরাকান আর্মি জানিয়েছে, সেনাবাহিনী ঘাঁটিতে হাজারের বেশি ল্যান্ডমাইন এবং শক্তিশালী বাঙ্কার তৈরি করেছিল। তবে তাদের আক্রমণে সেনাদের মনোবল ভেঙে পড়ে। শেষ পর্যন্ত আহত ও দুর্বল অবস্থায় সেনারা আত্মসমর্পণ করে।
অবরোধ চলাকালে মিয়ানমারের বিমানবাহিনী মংডুতে বোমা বর্ষণ করে। তবে তা পর্যাপ্ত ছিল না। আত্মসমর্পণের সময় বন্দি হওয়া ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন টুনসহ সেনাদের হতশ্রী অবস্থার ভিডিও প্রকাশ করেছে আরাকান আর্মি।
এ ঘটনাকে সামরিক জান্তার জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধে এটি তাদের সবচেয়ে বড় পরাজয়। এখন ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাখাইনে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ প্রায় শেষ। সিত্তে শহরই কেবল জান্তার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সেটি দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন। আরাকান আর্মি রাখাইনে নিজস্ব শাসনব্যবস্থা চালু করার পথেই এগিয়ে যাচ্ছে।