সূর্য সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, বধ্যভূমিতে জনতার ঢল
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:১৯ | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৪০
ঢাকা: শীতের ভোরে কুয়াশার চাদর ভেদ করেই শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে নেমেছে জনতার ঢল। আজ থেকে ৫৩ বছর আগে জাতির সূর্য সন্তানদের হত্যালীলায় মেতে উঠেছিল হানাদার বাহিনী আর তাদের দোসররা। সেই বেদনাবিধুর দিনকে স্মরণ করেই তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জড়ো হয়েছেন বয়স, লিঙ্গ, ধর্ম নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণ। চোখে জল, হাতে ফুল নিয়ে তারা শ্রদ্ধায় অবনত হয়েছেন জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবীদের স্মরণে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই জনস্রোত নেমেছে মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু করেন।
ছেলে-বুড়ো, নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী সব বয়সের ভিড় নেমেছে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। রাজধানী ঢাকা কেবল নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেই এসেছেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। এসেছেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারাও।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরাও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মিরপুর ও রায়েরবাজারে। শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোও শ্রদ্ধা জানিয়েছে শহিদদের প্রতি।
এর আগে সকাল ৭টা ৫ মিনিটের দিকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তারপর শ্রদ্ধা জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা দুজন কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার দেয় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল।
একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাত থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস জুড়েই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে পাকিস্তানি বাহিনী। ১৬ ডিসেম্বর সেই যুদ্ধে যখন বীর বাঙালি বিজয়ের মুখে দাঁড়িয়ে, তার ঠিক দুদিন আগে এ হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ নেয়। তাদের আর এ কাজে সহযোগিতা করেছিল এ দেশীয় দোসররা।
ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয় যখন অনিবার্য, তখন রাজাকার, আল-বদর বাহিনীর সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী হত্যা করে বাংলাদেশের প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবীদের। উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়া।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের এই দিনে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের সেই ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী হয় পৃথিবী। শরীরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের চিহ্নসহ তাদের মরদেহ পাওয়া যায় মিরপুর ও রায়েরবাজার এলাকায়। পরে তা বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। সেখানেই সূর্য সন্তানদের স্মরণে শ্রদ্ধাবনত জাতি।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর
বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা শহিদ বুদ্ধিজীবী শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস