বান্দরবান হানাদারমুক্ত দিবস আজ
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৪৮
বান্দরবান: ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর এই দিনে বান্দরবান পার্বত্য জেলা (তৎকালীন বান্দরবান মহুকুমা) থেকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। আর এভাবেই আজকের দিনটিকে বান্দরবান হানাদারমুক্ত দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বান্দরবানের মুক্তিযোদ্ধারা জানান, বান্দরবানে কোনো সম্মুখযুদ্ধ না হলেও ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাস্ত করতে যুদ্ধ হয় বান্দরবানের দুর্গম সীমান্তবর্তী কয়েকটি এলাকায়। দুর্গম গহিন অরণ্যে বর্তমান রোয়াংছড়ি উপজেলার নোয়াপতং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কানাইজো পাড়ার পাহাড়ি এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ চলে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে। মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দেন তৎকালীন ইপিআরের সুবেদার মেজর তাহের মোহাম্মদ আলী (টিএম আলী) প্রায় চার ঘণ্টা যুদ্ধ চলার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
কানাইজো পাড়াবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী মং চা উ মার্মার তথ্যমতে, ১৯৭১ সালের ১৫ নভেম্বর সারা রাত পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ চলে। সেই যুদ্ধে শহিদ হন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুবেদার মেজর টিএম আলী। পরবর্তী সময়ে বান্দরবানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে বিতাড়িত করেন হানাদার বাহিনীকে। এভাবে চলতে চলতে ১৪ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয় বান্দরবান জেলা।
বান্দরবান পার্বত্য জেলার মুক্তিযোদ্ধার সাবেক জেলা কমান্ডার ক্যাপ্টেন (অব.) আবুল কাশেম জানান, তৎকালীন বান্দরবান মহুকুমা প্রশাসক শুক্কুর আলী, বান্দরবান বোমাং সার্কেল চিফ বোমাংগ্রী রাজা মং শৈ প্রু চৌধুরী ও স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র মুহুরির নেতৃত্বে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে ১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয় বান্দরবান হানাদারমুক্ত দিবস।
বান্দরবান জেলায় স্বাধীনতা যুদ্ধে একমাত্র শহীদ খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা তাহের মোহাম্মদ আলী (টিএম আলী) বীর প্রতীক। তার স্মৃতি রক্ষার্থে শহীদ হওয়া স্থানটিতে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
এদিকে ১৪ ডিসেম্বর বান্দরবান হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সারাবাংলা/এনজে