ডিএনসিতে টেন্ডার ড্রপিংয়ে বাধার অভিযোগ
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:০২ | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:১৫
ঢাকা: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে আউটসোর্সিংয়ের ৩১৪টি পদে নিয়োগে টেন্ডার ড্রপিং নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্দিষ্ট সময়ে ঠিকাদাররা টেন্ডার জমা দিতে গেলেও তাদেরটা জমা না নিয়ে গোপনে আগেই নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জমা নেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্মবর) সকাল থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পৌঁছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এক পক্ষের টেন্ডার জমা নেওয়ায় বাকি ঠিকাদাররা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে টেন্ডার বঞ্চিত ঠিকাদররা।
ঠিকাদারদের পক্ষে গালফ সিকিউরিটি সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বিএস খান স্বপন বলেন, ‘অধিদফতরের পক্ষ থেকে তাদের সময় দেওয়া হয়েছিল সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১ টা। তারা যথাসময়ে উপস্থিত হলে তাদের ওপর হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। তাদের তাদের টেন্ডার জমা দিতে দেওয়া হয়নি। আগে থেকেই তারা একটি পক্ষকে কাজ দিতে এ কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মহাপিরচালকের কাছে অভিযোগ করলেও তিনি অজ্ঞাত কারণে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেছেন নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেছে এখন কিভাবে নেবেন।’
স্বপন বলেন, ‘টেন্ডার প্রক্রিয়ায় একটি সুরক্ষিত স্থানে মাল্টি ড্রপিং বক্স রাখার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি। বরং এমন স্থানে রাখা হয়েছে যেখানে সন্ত্রাসীরা অবাধে সেখানে প্রবেশ করে তাদের বাধা দিয়েছে। এ ঘটনায় প্রথমে পুলিশ পরে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে আসলেও কোন সুরাহা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘মিশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক আনিছুর রহমান তার দলবল নিয়ে ঠিকাদারদের টেন্ডার ড্রপিংয়ে বাধা দেয় ও ঠিকাদারদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এই আনিছ আওয়ামী লীগ সরকারের লোক হলেও এখন ভোল পাল্টে আবারো সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে। অবশ্য এই অধিদফতরে আগের সরকারের কিছু লোক এখনো রয়েছে, তাদের মাধ্যমেই হয়তো তার প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে টেন্ডার জমা দিয়েছে। এই আনিছ কিছুদিন আগেও মানুষকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল।
স্বপন জানান, ‘তাকে ফোনেও আনিছ নানভাবে হুমকি দিচ্ছে। বলছে আর কখনো কেউ কাজ পাবেনা, একমাত্র তার প্রতিষ্ঠান মিশনই সকল কাজ পাবে। তিনি এই টেন্ডার বাতিল করে পূণরায় টেন্ডার আহ্ববান ও টেন্ডার জমা দিতে বাধা দিতে আসা সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মাদকদ্রব্য অধিদফতর সুত্রে জানা যায়, আউটসোর্সিংয়ে ৩৪১ জন জনবল নিয়োগের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে টেন্ডার আহ্ববান করা হয়। সিকিউরিটি কোম্পানিগুলো মূলত এই কাজের টেন্ডার জমা দিয়ে থাকে। এখানে বড় অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়ে থাকে। যেমন প্রার্থীদের কাছ থেকে ঠিকাদার কোম্পানি এককালীন একটা টাকা নিয়ে থাকে অন্যদিকে মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তাদেরও ঠিকাদার কোম্পানিকে টাকা দিতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
সারাবাংলা/ইউজে/এমপি