ঘূর্ণিঝড় চিডোর তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপ ফ্রান্সের মায়োত্তে
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:২৮ | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:০০
ফ্রান্সের ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল মায়োত্তেতে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় চিডো গত ৯০ বছরে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ক্যাটাগরি ৪ মাত্রার এই ঝড়ে এখন পর্যন্ত ২১ জন নিহত এবং ৮৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছেন, মৃতের সংখ্যা কয়েকশ থেকে হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে দ্বীপের ৩ লক্ষ ২০ হাজার জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় চিডোর ১৮০ থেকে ২৩০ কিলোমিটার গতিবেগের বাতাস দ্বীপজুড়ে ব্যাপক তান্ডবে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়াসহ, ঘরবাড়িরের ছাদ উড়ে যাওয়া এবং গাছপালা উপড়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। মায়োত্তের স্থানীয় প্রশাসন বাসিন্দাদের ঘরে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হলেও, ফ্রান্সের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফ্রঁসোয়া-জাভিয়ের বিউভিল জানান, ‘প্রাণহানি হাজারে পৌঁছতে পারে, এমনকি কয়েক হাজারও হতে পারে।’
ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১ লক্ষ মানুষকে ৭০টি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। দ্বীপের প্রধান হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফলে চিকিৎসা সেবা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনেভিয়েভ দারিয়ুসেক বলেছেন, ‘হাসপাতালের শল্যচিকিৎসা, আইসিইউ, মাতৃসেবা এবং জরুরি বিভাগে পানি ঢুকে পড়েছে এবং অনেক জায়গা ধ্বংস হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোও অচল হয়ে পড়েছে।’
মায়োত্তের রাজধানী মামুদজুর মেয়র আম্বদিলওয়াহেদো সুমাইলা বলেন, ‘স্কুল, হাসপাতাল এবং ঘরবাড়ি সবকিছুই পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় চিডো কিছুই ছাড়েনি।’
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো জানান, এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ বাড়িঘর হারিয়েছেন। মন্ত্রী রেতাইয়ো সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মায়োত্তে পৌঁছান। তার সঙ্গে ১৬০ জন সৈন্য ও অগ্নিনির্বাপক কর্মী ছিলেন, যারা ইতিমধ্যেই মোতায়েন থাকা ১১০ জন কর্মীর সঙ্গে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেন।
এখনও পর্যন্ত পুরো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে, কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা এই বিপর্যয়ের চূড়ান্ত চিত্র আরও ভয়াবহ হতে পারে।
সারাবাংলা/এনজে