স্কুলভর্তি
লটারিতে নির্বাচিত ৩ লাখ ৬ হাজার শিক্ষার্থী
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৩ | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৭
ঢাকা: দেশের সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে ৩ লাখ ৬ হাজার ৮৮ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। এ ছাড়াও আরও দুটি অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে ৩ লাখ ৬ হাজার ৭০৩ জনকে। ভর্তির জন্য যারা মনোনীত হয়েছেন তাদের মোবাইলে এসএসএস করে স্কুলের নাম জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভর্তির তারিখ শিগগিরই জানিয়ে দেওয়া হবে। প্রথম তালিকায় সুযোগ পেয়েও যারা ভর্তি হবে না, তাদের ফাঁকা আসনের জন্য আরও দুটি অপেক্ষমাণ তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, লটারিতে সরকারি স্কুলগুলোতে প্রথম তালিকায় নির্বাচিত হয়েছে ৯৮ হাজার ২০৫ জন। আর বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ৮৮৩ জন। এ ছাড়াও সরকারি স্কুলের প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে ৭৯ হাজার ৫০২ জনকে এবং দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে ৫৮ হাজার ৫৫৮ জনকে। বেসরকারি স্কুলগুলোর জন্যও দুটি অপেক্ষমাণ তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ১৫৬ জন এবং দ্বিতীয় তালিকায় রাখা হয়েছে ৬৭ হাজার ৫১৪ জনকে।
মাউশি জানায়, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা লটারির ফল ঘরে বসেই অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে জানতে পারবেন। সেজন্য (https://gsa.teletalk.com.bd/ প্রবেশ করে অভিভাবকরা তাদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লটারির ফল ডাউনলোড ও প্রিন্ট দিতে পারবেন। অন্যদিকে, টেলিটক মোবাইলে এসএমএস অপশনে গিয়ে GSA ResultUser ID লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে।
এর আগে, দুপুর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে স্কুলে ভর্তি লটারির ফল প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা) অধ্যাপক এস এম আমিনুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, একসময় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ভালোদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা ছিল। শুধু মেধাবীরাই ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ পেত। কম মেধাবীরা পেছনে পড়ে থাকত। কম মেধাবীদের পশ্চাতে রাখা যাবে না, তাদেরকে উঠিয়ে আনতে হবে। লটারি সিস্টেম চালু হওয়াতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন সমন্বয়ের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। এতে ভালো ও মন্দের সমন্বয় হবে বলে মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে যেসব ছোট ছোট শিশুরা অধ্যয়ন করে তাদের অদম্য ক্রিয়েটিভিটি থাকে। তাদের এই ক্রিয়েটিভিটি জাগ্রত করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে এবং শিক্ষকদের ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শিশুদের এই ক্রিয়েটিভিটির মূল্যায়ন করে না। প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাশ করার উদ্দেশ্যে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। যার কারণে তারা শুধু প্রশ্ন মুখস্থ করে পরীক্ষা দেয়। এতে তাদের ক্রিয়েটিভিটি নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রিয়েটিভিটি জাগ্রত করতে হলে শিক্ষকদের উদ্যেগ গ্রহণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীদের মাঝে মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে। মূল্যবোধ পরিবার থেকে তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, অনেক শিশুদের মাঝে মূল্যবোধ তৈরি হয় না। শিশুদের মধ্যে মূল্যবোধ তৈরি করার জন্য স্কুল ও মাদরাসার শিক্ষকদের ভূমিকা নিতে হবে। কারণ, শিশুরা স্কূল ও মাদরাসায় বেশি সময় কাটায়। আমি মনে করি, প্রথম শ্রেণি হতেই মূল্যবোধের ওর কিছু কিছু লেখা থাকতে পারে।’
প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন হলো সকল শিক্ষার্থীরা প্রত্যেকে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।’ এতে সেলফ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন সাধন করতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম