হটডগে ৩৬, কোকে ১২ মিনিট আয়ুক্ষয়: গবেষণা
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:৩৯ | আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০০:৩২
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক লুইস আলবের্তো জামোরা ও তার নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি একটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন। আন্তর্জাতিক এক বিজ্ঞান সাময়িকীতে সেই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে এবং তা রীতিমতো চমকে ওঠার মতো। কারণ গবেষণার মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, একটি হটডগ কেড়ে নেয় ৩৬ মিনিট আর এক একটি বোতল বা ক্যানজাত কোক মানুষের জীবন থেকে অন্তত ১২ মিনিট সময় কেড়ে নেয়।
কোক ছাড়াও মানুষের আয়ুষ্কাল কমিয়ে দেয় এমন বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের তালিকা করেছেন অধ্যাপক জামোরা।
যুক্তরাষ্ট্রে সহজলভ্য ৫ হাজার ৮০০ টিরও বেশি খাদ্য ও পানীয়কে লক্ষ্য করে পরিচালিত বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান ও তার ফলাফল পর্যালোচনার ভিত্তিতে এ দুই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
অধ্যাপক জামোরার গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, মানুষের আয়ুষ্কাল হ্রাসের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে ফাস্টফুড শ্রেণিভুক্ত বিভিন্ন খাদ্য-পানীয় এবং প্রক্রিয়াজাত-অতিপ্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও মাংস। যেমন একটি হটডগ মানুষের আয়ুষ্কাল ৩৬ মিনিট কমিয়ে দেয়; আর এর সঙ্গে যদি কোমল পানীয় যুক্ত হয়, তাহলে আয়ুষ্কাল কমে আরও ১২ মিনিট। এছাড়া একটি চিজবার্গার ৯ মিনিট এবং একটি বেকনের ফালি ৯ মিনিট আয়ু কমায়। এসব খাদ্যপণ্যে থাকা ক্যালরি, চিনি, লবন ও অন্যান্য উপাদান এ জন্য দায়ী।
অবশ্য মানুষের আয়ুষ্কাল বাড়ায়—এমন খাবারের তালিকাও করেছেন অধ্যাপক জামোরা এবং তার দলের সদস্যরা। সে তালিকায় স্থান পেয়েছে ফল, শাকসবজি, পিনাট বাটার এবং ঘরে তৈরি জ্যাম-জেলির স্যান্ডউইচ।
গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা প্রতিদিন গরু কিংবা প্রক্রিয়াজাত মাংস খেতে অভ্যস্ত, তারা যদি প্রতিদিনের সংগৃহীত ক্যালরির মাত্র ১০ শতাংশ মাংসের পরিবর্তে শাকসবজি-ফলমূল থেকে সংগ্রহ করেন, সেক্ষেত্রে তাদের মোট আয়ুষ্কালের সঙ্গে অন্তত ৪৮ মিনিট যোগ করতে পারবেন।
জামোরার গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ড. অলিভার জোলিয়েট সাংবাদিকদের জানান, কেবল খাদ্যগ্রহণের জন্য মানুষের আয়ুষ্কাল কমে যাওয়ার তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ দেশটিতে প্রতিদিন যত মাংস খাওয়া হয়, তার প্রায় ৭৫ শতাংশই প্রক্রিয়াজাত কিংবা অতিপ্রক্রিয়াজাত।
ড. জোলিয়েট সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একেবারেই ছোট পরিসরে গবেষণাটি করেছি। আরও বড় পরিসরে করলে হয়তো অনেক তথ্য জানা যেত। তবে এই গবেষণার মাধ্যমে আমরা একটি পরিষ্কার বার্তা দিতে চেয়েছি; আর তা হলো—যদি আমরা সুস্থ থাকতে চাই এবং বেশিদিন বাঁচতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে।’
সারাবাংলা/এইচআই