Wednesday 18 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মুক্তিযুদ্ধে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিদান কড়ায়গণ্ডায় আদায় করেছে ভারত’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৪ | আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৬

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাশে দাঁড়িয়েছিল, সেজন্য কৃতজ্ঞ। তবে, বিগত বহু বছর তারা কড়ায়গণ্ডায় প্রতিদান আদায় করেছে। আজও ফারাক্কার পানি সমস্যা সমাধান হয়নি। সীমান্তে মানুষ মারা হচ্ছে। ভারত বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশে অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যার সৃষ্টি করে।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার এবং ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে ১২ দলীয় জোট এ প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করে।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার টুইটে যে মনোভাব প্রকাশ করেছেন, সেটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যে ষড়যন্ত্র রেসকোর্সে শুরু হয়েছিল, এটি সেটিই।’’

তিনি বলেন, ‘‘গত ১৭ বছরে ভারতকে বাংলাদেশ শুধু দিয়েই গেছে। বলা হয়েছে ভারতকে ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে। কিন্তু, আখাউড়া দিয়ে ভারতের এত ট্রাক গেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি শুধু কমেছে। বিগত বছরগুলোতে আমাদের শুধু ভুল বোঝানো হয়েছে।’’

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘আমরা রাষ্ট্র মেরামত করার লক্ষ্যে ৩১ দফা নিয়ে কাজ করছি। অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। এরশাদের পতনের সময় কতদিন পর নির্বাচন হয়েছিল, সেটি সবারই মনে থাকার কথা। নির্বাচন করতে কতদিন লাগে সেটি দেশের মানুষ জানে। যেহেতু পতিত স্বৈরাচার সরকার সাড়ে ১৫ বছরে দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে, সেজন্যই সব রাজনৈতিক দল অন্তর্র্বতী সরকারকে সহযোগিতা করছে। কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে।’’

বিজ্ঞাপন

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘সব সংস্কার তো আপনারা করতে পারবেন না। কখন নির্বাচন হবে সেটা স্পষ্ট করুন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন একরকম। আবার তার প্রেস সচিব বলেন আরেক রকম। আপনাদের তো আমরা সবাই মিলে সহযোগিতা করছি। আপনারা দায়িত্ব নিয়ে কথা বলুন, না হলে মানুষ বিভ্রান্ত হবেন।’’

ডা. জাহিদ বলেন, ‘‘মানুষের জীবন দুর্বিষহ। এখান থেকে উত্তরণের জন্য জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রেত্মাত্মারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদের চিহ্নিত করে, গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনুন। তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। যারা দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে দেশবাসী স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’’

সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘‘স্বাধীনতার মাস ডিসেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের স্বাধীনতার গৌরব ছিনতাই করতে চায়। বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ যুদ্ধ করে অপরিসীম ত্যাগ শিকার করেছেন। আমরা নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যকে ঘৃণা করি, প্রত্যাখ্যান করি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে সেটি কেউ বিনষ্ট করতে পারবে না। আগামীতেও সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করব।’’

জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য বাংলাদেশের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার শামিল। রক্ত দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে কেউ ষড়যন্ত্র করলে আমরা দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তার দাঁতভাঙা জবাব দিতে পিছপা হব না।’’

বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘‘এই সরকারকে অবিলম্বে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। যদি কোনো উপদেষ্টা কিংস পার্টি গঠনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার কল্পনা করেন, সেটি হবে ভুল চিন্তা। কারণ, আমরা লড়াই করতে জানি। রাজপথে এখনও আছি।’’

প্রতিবাদা সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মুহাম্মদ ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এমএ মান্নান, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের (পিএনপি) ফিরোজ মো. লিটন প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর