‘খাদ্যের অধিকারকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া দরকার’
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:০১
ঢাকা: জৈব কৃষি নিয়ে কোন সরকার জোরেশোরে কাজ করেনা বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আর খাদ্যের অধিকারকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি। দেশের কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় কৃষি, পানি ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘কৃষিখাতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘খাদ্যের অধিকারকে সাংবিধানিক অধিকার হিসাবে যুক্ত করা দরকার। অধিক খাদ্যের পাশাপাশি আমাদের নিরাপদ খাদ্যের কথা ভাবতে হবে। দেশে সারের ব্যবহার ভয়ঙ্কর মাত্রায় বেড়েছে। দ্বিগুণের চেয়ে বেশি কীটনাশক আমরা ব্যবহার করছি। শুধু খাদ্য ফলালাম এটা হলেই চলবেনা, নিরাপদ খাদ্যের কথা ভাবতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জৈব কৃষি নিয়ে কোন সরকার জোরেশোরে কাজ করছে আমি আমার জীবনেও দেখিনি। ব্যবসায়ীরা সব সময় বলবে, কীটনাশক ব্যবহার না করলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। কিন্তু এখন জৈব কৃষির প্রসার বাড়ছে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সব নদী ও খাল দূষণমুক্ত করে ফেলবোনা, এটা তো সম্ভব না। কারণ ৫৩ বছরের ঝঞ্জাল তো আমরা মাত্র ৪ মাসে পরিষ্কার করে ফেলতে পারবোনা। বিগত সরকার জেনেটিক্যাল মডিফাইড ধান চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘দেশে সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। তবে সার বিপনন নিয়ে আমরা বিস্তর পরিকল্পনা করছি। আমরা কৃষকদের স্মার্ট কার্ড দেওয়া পরিকল্পনা করছি। কৃষকের জমি অনুযায়ী কার্ডের মাধ্যমে সার বরাদ্দ দেওয়া হবে। এতে সারের বিপনন ব্যবস্থা আরও পরিকল্পিত হবে।’
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘একেক দেশে কৃষি উৎপাদনের প্যাটার্ন একেকরকম। উন্নয়নশীল দেশে উৎপাদনে যারা জড়িত তারা নিজের জন্য খাবার রাখেন, যেমনটা হয় আমাদের দেশেও। বাকিটা বিক্রি করেন। অধিকাংশ ফার্মার শিক্ষিত নন। কৃষিতে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। এটা আবহাওয়া ও বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। একারণে প্রাচীন পদ্ধতিতে তারা চাষাবাদ করেন। নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করতে চান না। তারা সাহস করেন না।’
বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সবুজের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকটি পরিচালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক কাওসার আজম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব কৃষিবিদ ড. আলী আফজাল। আরও বক্তব্য দেন রাখেন ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক খন্দকার মুহাম্মদ রাশেদ ইফতেখার, ক্লাইমেট-স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শেখ ফজলুল হক মনি প্রমুখ।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এসআর