আন্দোলনে সক্রিয় ৫ শিক্ষার্থীর খুনিদের গ্রেফতারে আলটিমেটাম
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:২৪ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:১৩
ঢাকা: জুলাই অভ্যুত্থানের সক্রিয় ৫ শিক্ষার্থীর খুনিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার না করলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অনশনের ঘোষণা দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি এই ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হচ্ছে। আগামী শনিবারে মধ্যে যদি তাদের গ্রেফতার করা না হয়, তাহলে ইনকিলাব মঞ্চ রোববার (২২ ডিসেম্বর) জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অনশন করবে।
এ সময় তিনি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা এবং দলটির উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১২ জুলাই ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিহানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একইদিন নারায়নগঞ্জে এআইইউবির শিক্ষার্থী সীমান্তকে চুরিকঘাত করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেলে তিনি মারা যান। ১৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের ২ নম্বর সেক্টরের লেক থেকে সুজানা আক্তার (১৭) নামে এক কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পর সেখান থেকে সাইনুর রশিদ ওরফে কাব্য (১৬) নামে আরেক কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়। একইদিন চট্টগ্রাম থেকে জসিম উদ্দিন নামে একজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শরীফ বলেন, ‘গতকাল কৃষকদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জসিমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার চাচা বলেছে, আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে। অথচ দেশের একটি গণমাধ্যম নিউজ করেছে, খাবারের উচ্ছিষ্টের ব্যবসা নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। একটা গণমাধ্যম মিসলিডিং করলে সেটা কীভাবে অন্যরা কপি করে দেখুন। আমরা দেখেছি, শহিদ ফাহমিনের ক্ষেত্রে একটি মূলধারার গণমাধ্যম সংবাদ করেছে, এটিএম থেকে টাকা তুলতে গেলে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অন্যরা তা কপি করেছে। এভাবে বিপ্লবীদের চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে বললাম। তা না করে এখন প্রত্যেক রাজনৈতিক দল ভোটের রাজনীতিতে ফিরে গেল এবং আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করল। প্রত্যেকে আওয়ামী লীগের ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাগ বসাল। বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ যে যার ইচ্ছে মতো আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার চায়, আমরা যেন এমনভাবে কথা না বলি যাতে তারা বেকায়দায় না পড়ে। কিন্তু তাদের রক্ষা করতে করতে দেখি, জুলাই অভ্যুত্থানের সক্রিয় ছাত্র-জনতার নিরাপত্তা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। ছাত্রজনতাকে অনিরাপদ করে সরকারকে নিরাপদ রাখার দায় আমাদের নাই। যদি পারেন তাহলে নিরাপত্তা দেন, নইলে নির্বাচন দিয়ে সরে যান। আপনাদের পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য পাঠানো হয়নি। আপনাদের ক্ষমতায় পাঠানো হয়েছে বিচারের জন্য।’
ছাত্র-উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা অনেক কাজ করতে চেয়েও পারছেন না। সে দায় আপনাদের ওপর নিচ্ছেন কেন? আপনারা কোনো কাজ না পারলে সংবাদ সম্মেলন করেন। কোন কোন উপদেষ্টা ও আমলা আপনাদের বাধা দিচ্ছে, তা জাতির সামনে প্রকাশ করুন।’
সারাবাংলা/এআইএন/এমপি/আরএস