বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আন্দোলনে নামছেন ক্যাডাররা
২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:২৪ | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:১২
ঢাকা: বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আন্দালনে নামছেন ক্যাডার কর্মকর্তারা। এ লক্ষ্যে ৫ দফা কর্মসুচি ঘোষণা করেছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের নেতাদের এক মতবিনিময় সভায় এ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর সেগুনবাগিচার পূর্ত ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ২৫টি ক্যাডারের সভাপতি-সেক্রেটারিসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা উপদেষ্টার দফতরের জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈষম্য নিরসনের দাবীতে পরিষদ ঘোষিত ৫ দফা কর্মসূচি হলো-
১. ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ (সোমবার) প্রতিটি ক্যাডার এসোসিয়েশন
কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উদ্ভুত পরিস্থিতি বিষয়ে বিবৃতি দেবে।
২. ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ (মঙ্গলবার) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত
এক ঘন্টা সব অফিসে কলমবিরতি পালন করা হবে ।
৩. ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ (বৃহস্পতিবার) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সব
অফিসে স্ব-স্ব কর্মস্থলের সামনে মানব বন্ধন কর্মসূচী পালিত হবে ।
৪. যে সব বিভাগে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়নি, অতি দ্রুত
সেখানে সমাবেশ আয়োজন এবং জনসম্পৃক্ততা আরো বৃদ্ধি করা হবে।
৫. আগামী ২০২৫ সালের ৪ জানুয়ারি (শনিবার) ঢাকায়
সমাবেশ আয়োজন করা হবে এবং সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
বিজ্ঞপিতে বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রেখে অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করেছে। এছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিস হতে আলাদা করার কথা বলা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২৫টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ এর সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা ছাড়া এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনসমূহের মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সরকারের সকল নীতি নির্ধারণ এবং বাস্তবায়নে নেতৃত্ব প্রদান করে সিভিল প্রশাসন। যা বর্তমানে ২৬টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত। যেখানে কার্যকর রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আমূল পরিবর্তন দরকার, সেখানে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বৈষম্যমূলকভাবে উপসিচব পুলে একটি ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা সুপারিশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করায় সিভিল সার্ভিসের অন্য ২৫টি ক্যাডারের সকল সদস্যের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা আরো বলেন, কমিশনের এসব সিদ্ধান্তের সুযোগ নিয়ে একটি গ্রুপ ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য প্রচার শুরু করেছে। সিনিয়র সার্ভিস পুল (বা উপসচিব পুল) এর পদসমূহ কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারের নয়। সার্ভিস অ্যাক্ট ১৯৭৫ অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে এ সকল পদে নিয়োগের কথা থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে কোটা পদ্ধতি চালু রেখেছে প্রশাসন ক্যাডার। এছাড়া ২০১৮ এর নির্বাচনের এই অ্যাক্ট রহিত করে ২০২৪ এর নির্বাচনের পর এ সকল পদ নিজেদের তফসিলে অন্তর্ভূক্ত করেছে প্রশাসন ক্যাডার। যা মেধাভিত্তিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রগঠনে মারাত্মক অন্তরায়। সিভিল সার্ভিসের কার্যকর সেবা নিশ্চিত করতে আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষ থেকে পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি করা হয়েছে।অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে স্ব-স্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তারা পদায়িত হবেন। বর্তমানে প্রতিটি সেক্টরে নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা। যারা সেই সেক্টর সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ। ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্খিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। এছাড়া সব সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক সিন্ডিকেট, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও বৈষম্য রাষ্ট্রের সকল সেক্টরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে।
সারাবাংলা/জেজে/আরএস