কয়েকটি ইনল্যান্ড পোর্ট পাবলিকের হাতে যাচ্ছে— জানালেন নৌ উপদেষ্টা

সভায় নৌ পরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সারবাংলা।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশের কয়েকটি ইনল্যান্ড পোর্ট পাবলিকের হাতে ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে একটি-দুটি কিংবা চারটি-পাঁচটি লোকের হাতে জিম্মি করে রাখতে সরকার চায় না।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর বোটক্লাবে অনুষ্ঠিত বিএসসি’র ৪৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। এসময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ ও বিএসসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক ছিলেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের শিপিং ইন্ডাস্ট্রি যেন আরও উন্নত হয় সেই চেষ্টা আমরা করছি। প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে বলেছি, আপনারা যদি শিপিং লাইনে আসতে চান, তাহলে আমাদের সহযোগিতা পাবেন। শুধু তা-ই নয়, আমরা চেষ্টা করছি সরকারের অনুমতিক্রমে, ইনল্যান্ড পোর্ট, কয়েকটি পাবলিকের কাছে দেওয়ার জন্য। এ ধরনের ব্যবসা আর সরকার করতে পারে না।’

‘আপনারা জানেন, চট্টগ্রাম পোর্ট অত্যন্ত মুনাফার একটা জায়গা। চট্টগ্রাম পোর্টের যে উন্নতি হয়েছে, এটা পোর্ট অথরিটি, মন্ত্রণালয়ের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে হয়েছে। আমি এ নিয়ে চট্টগ্রাম পোর্টে তিনবার গিয়েছি, এবারও যাব। চট্টগ্রাম পোর্টের যে সমস্যা, সেগুলো আমরা দূর করার চেষ্টা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামে (বন্দরে) ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থা করছি। কয়েকটা কান্ট্রি চট্টগ্রাম বন্দর, বে টার্মিনালসহ আরও অন্যান্য বন্দরে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ৬০০ মিলিয়ন ডলার বে টার্মিনালে বিনিয়োগ করার জন্য বসে আছে। দ্রুত আমরা এটা সাইন করবো।’

‘এতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের শ্রমিকরা অধিকতর চাকরির সুযোগ পাবেন। বেতন হবে বর্তমান পে স্কেলের চাইতে আরও বেশি। এই যে চট্টগ্রাম বন্দরকে নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর আশা-প্রত্যাশা, আমরা এটাকে একটি, দুটি কিংবা পাঁচটি লোকের হাতে শুধু জিম্মি করে রাখতে চাচ্ছি না। এ ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। এটা চট্টগ্রাবাসীর জন্য অনেক বড়ো গর্বের বিষয় হবে। চট্টগ্রাম বন্দর আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে।’

বিএসসি’র জাহাজের বহরকে আরও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বিএসসির বহরকে আরও বড় করার চেষ্টা করছি। শিপিং করপোরেশনের নিজস্ব টাকায় আমরা দুটো বাল্ক ক্যারিয়ার কিনছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা পাঁচ বছরের বেশি (মেয়াদের) কোনো জাহাজ কিনবো না। এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে যদি কেউ বিক্রি করে, সেটা নেব। এমডি মহোদয় আমাকে জানিয়েছেন, দুটি জাপানি শিপ পাওয়া গেছে, যেগুলো তারা বিক্রি করবে। জাপানি শিপ আশা করি নিশ্চয় খুব ভালো হবে।’

দুর্নীতি বন্ধে অন্তর্বর্তীকালীন কঠোর অবস্থানের জানান দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের (বিএসসির শেয়ারহোল্ডার) আশ্বস্ত করছি, এই মন্ত্রণালয়ে আমি যতদিন আছি, ইনশল্লাহ আপনারা বিশ্বাস রাখতে পারেন, এখানে আগের মতো চুরিচামারি আর হবে না। ১০০ টাকাও যদি কেউ ঘুষ নেয়, আমার হাতে যদি কেউ ধরা পড়ে, আমি চেষ্টা করবো তার শাস্তি নিশ্চিত করতে।’

সারাবাংলা/আরডি/এসআর

ইনল্যান্ড পোর্ট চট্টগ্রাম নৌপরিবহন উপদেষ্টা