‘মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে ভারত’
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৩ | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৩
ঢাকা: ‘‘মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে ভারত’’- এমনটিই অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে চত্বরে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
‘ভারতের আগ্রাসন ও দেশজুড়ে শেখ হাসিনার অরাজকতার’ প্রতিবাদে বাংলাদেশ সমবায় দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে।
দুদু বলেন, ‘‘ভারত গত ৫৩ বছর ধরে আমাদের বন্ধুত্ব ও কৃতজ্ঞতাকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভের পর তাদের সেনাবাহিনী এবং জনগণ বাংলাদেশে লুটপাট করেছিল। সেই সময় ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘সেই সময় সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে তারা ট্রাক ভরে অস্ত্র ভারতে নিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় রাশিয়ার কয়েকটি এসএলআর ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকার অস্ত্র সেই সময় বাংলাদেশে থাকার কথা ছিল।’’
শামসুজামান দুদু বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পরপরই পার্শ্ববর্তী বন্ধু নামধারী দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে যে ব্যবহার করেছিল, সেই একই ব্যবহার আমরা এই ডিসেম্বরেও লক্ষ্য করছি। চার মাস আগে স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে। সেই পতন ভারত আজ পর্যন্ত মেনে নিতে পারেনি। ভারত গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা এবং তার দলকে আশ্রয় দিয়েছে। এই আশ্রয়ের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণ হয়েছে, তারা গণহত্যাকারী এবং লুটেরার পক্ষের একটা শক্তি। অর্থাৎ ভারত আওয়ামী লীগ, শেখ মুজিব, শেখ হাসিনার বাইরে অন্য কোনো চিন্তা করতে পারে না। এর বাইরে কোনো কিছু চিন্তা করতে পারে না বলেই তারা বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু হতে পারেনি।’’
তিনি বলেন, ‘‘কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সেই চুক্তি পার্লামেন্টে উত্থাপন করার কথা। শেখ হাসিনার আমলে এ পর্যন্ত একটা চুক্তিও আমরা পার্লামেন্টে উত্থাপন হতে দেখিনি। এমনকি সংবাদ সম্মেলনেও উত্থাপন করেনি। বরঞ্চ শেখ হাসিনা দম্ভ করে বলেছে, আমি ভারতকে এমন কিছু দিয়েছি, যা ভারত কখনোই ভুলতে পারবে না।’’
ভারতের উদ্দেশে দুদু বলেন, ‘‘আপনারা হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছেন না; এর থেকে মর্মান্তিক ঘটনার কিছু কি আছে? ভারতে আমাদের দেশের মানুষ যায়, টাকা খরচ করে হোটেলে থাকে। ডাক্তারদেরকে টাকা দিয়ে তারপর চিকিৎসা নেয়। ফ্রি চিকিৎসা নিতে যায় না। এখন কী অবস্থা? আপনাদের হাসপাতাল ফাঁকা হয়ে গেছে। আপনাদের অনেকের চাকরি চলে যাচ্ছে। যে হোটেলগুলোতে বাঙালিরা থাকত সেগুলো একেবারে ফাঁকা। এখন কলকাতা থেকে যেসব সংবাদ আসছে সেগুলো মর্মান্তিক। আমরা তো ভাই ইচ্ছা করে এসব বন্ধ করিনি। আপনারা বন্ধ করেছেন। আপনারা ভিসা বন্ধ করেছেন, আমরা তো কিছু বলিনি। বন্ধ রাখেন।’’
বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ নুর আফরোজ বেগম জ্যোতি, সাধারণ সম্পাদক ড. মো. নিজাম উদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মো. রতন মিয়া প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/আরএস