বিদ্যানন্দ ও চসিকের প্রকল্প
পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে মিলবে ডিম-তেল-মাছ-মুরগি
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:১৪ | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: এক কেজি পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে ৬টি ডিম, চার কেজি দিলে এক লিটার সয়াবিন তেল কিংবা মাছ-মুরগি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এমন ব্যতিক্রমী কর্মসূচি শুরু করেছে। চট্টগ্রাম নগরীকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত করতে ‘প্লাস্টিকের বিনিময়ে বাজার’ নামে এক বছরের এ পাইলট প্রকল্প নিয়েছে বলে জানিয়েছে চসিক ও বিদ্যানন্দ।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর বাকলিয়া স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমি পলিথিন-প্লাস্টিকের দূষণমুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে চাই। এ অভিনব প্রকল্প আমার লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। যে কোনো সমস্যা সমাধানে বুদ্ধিমত্ত্বার পরিচয় দিলে সেটির সুফল পাওয়া যায়। আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীর প্রাণপ্রবাহ রক্ষা করা এবং প্লাস্টিক দূষণে বিপন্ন প্রাণীকুলকে রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। এজন্য সম্মিলিতভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
বিদ্যানন্দের বোর্ড সদস্য মো. জামাল উদ্দিন জানান, প্রকল্পের অধীনে নগরীর পতেঙ্গা ও হালিশহরে দুটি স্থায়ী স্টোর চালু করা হচ্ছে। সেখানে যে কেউ পরিত্যক্ত প্লাস্টিক জমা দিলে স্বল্পমূল্যে বাজার করার সুযোগ পাবেন। এছাড়া ৫০টি ভ্রাম্যমাণ বাজার ক্যাম্প হবে, যেখানে প্রতি ইভেন্টে পাঁচশোর বেশি পরিবার প্লাস্টিক জমা দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবেন।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২ লাখ কেজি পরিত্যক্ত প্লাস্টিক রিসাইকেল করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে যেখানে প্রতি কেজি পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা, সেখানে এ প্রকল্পে বিদ্যানন্দ ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত দাম দিচ্ছে।
‘প্রতি কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে গড়ে ৬০ টাকার পণ্য দিলেও রিসাইকেল কোম্পানির কাছে বিক্রি করে প্রতি কেজিতে গড়ে ৩০ টাকার কম পাচ্ছি। ২ লাখ কেজি প্লাস্টিক রিসাইকেল করতে আমরা পণ্য দিচ্ছি ১ কোটি ২০ লাখ টাকার। প্লাস্টিক বিক্রি করে ৬০ লাখ টাকা পাওয়া যাবে। ফলে পরবর্তী বছরে একই পরিমাণ প্লাস্টিক রিসাইকেল করতে ভর্তুকি ৫০ শতাংশ কমানো সম্ভব হবে। তৃতীয় বছরের পর কোনো ভর্তুকি ছাড়াই প্রকল্পটি পরিচালনা করা যাবে,’ – বলেন জামাল উদ্দিন।
চসিকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্লাস্টিকের বিনিময় পণ্যের মধ্যে ডিম, সয়াবিন তেল, মাছ, মুরগি, স্যানিটারি প্যাড, কাপড়, শিক্ষাসামগ্রীসহ মোট ২২ ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আছে। উদ্বোধনী দিনে পাঁচশো’র বেশি স্থানীয় প্রান্তিক পরিবার প্লাস্টিকের বিনিময়ে বাজার করার সুযোগ পেয়েছেন। প্রথম দিনেই ৫ মেট্রিক টন পরিত্যক্ত প্লাস্টিক সংগ্রহ হয়েছে।
একটি টেকসই অলাভজনক ব্যবসায়িক মডেল হিসেবে ২০২২ সালে প্রথমবার সেন্টমার্টিনে বিদ্যানন্দ ‘প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোর’ চালু করে।
সারাবাংলা/আরডি/এসআর
চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন চসিক প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোর বিদ্যানন্দ ভর্তুকি রিসাইকেল