২ সপ্তাহের মধ্যে ড্যাপ জটিলতার নিরসন: রাজউক চেয়ারম্যান
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:১৭ | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৩৯
ঢাকা: আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপ নির্মাণ বিধিমালা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মো. ছিদ্দিকুর রহমান।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত রিহ্যাব ফেয়ার-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রিহ্যাব সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, রিহ্যাব সিনিয়র সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়া, সহ-সভাপতি ও মেলা কমিটির চেয়ারম্যান আক্তার বিশ্বাস, কমিটির কো-চেয়ারম্যান মিরাজ মুক্তাদির প্রমুখ।
রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপে) নির্মাণ বিধিমালা নিয়ে জটিলতা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করা হবে। রাজধানীর আশপাশের শহরগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে ঢাকার ওপর চাপ কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘ড্যাপ বা ফারের যে বিষয়টি আমারা তা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত করে ফেলব। বিষয়টি অনলাইনে দেওয়া রয়েছে। সবার মতামত নেওয়া হয়েছে। ড্যাপের বিষয়টি আমরা বিবেচনায় নিয়েছে। আশা করি এতে আর কোনো সমস্যা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিহ্যাবের পক্ষ থেকে যেসব ফ্ল্যাট করা হয়, সেসবের কাজ ৩ বছর বা ৬ বছরেও শেষ হয় না। অনেক সময় পরিপূর্ণ টাকা দেওয়ার পরও আবার টাকা দাবি করা হয়। আশা করি রিহ্যাবের সকল সদস্য জনভোগান্তি ও হয়রানি যেন কম হয় সেটি বিবেচনায় নিবে।’
রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে জমির পরিমাণ কমছে। আমরা জলাধার ও কৃষিজমি কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেবো না। বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিল্ডিং ৪০ তলা, তাও কুষ্টিয়ায়। ঢাকায় উঁচু ভবন কম। আমরা ঢাকা শহরে উঁচু ভবন দেখতে চাই। এমন বাসস্থান করি যেন আলো বাতাস থাকে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুন্দর পরিবেশ দিয়ে যেতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভবন ব্যবহারের অকুপেন্সি সার্টিফিকেট খুব দ্রুত প্রদান করার বিষয়ে আমরা কাজ করছি। এটা নিয়ে নানা জটিলতা ছিল। এটাকে আমরা সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছি। সার্টিফিকেট প্রদানে যদি কোনো বিলম্ব বা জটিলতা হয় তাহলে সেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।’
এদিকে, রিহ্যাব মেলার উদ্বোধনের পর প্রথম দিনেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মেলায় কথা বেসরকারি চাকরিজীবী জোনায়েত রনি বলেন, ‘মেলায় নানা ধরনের অফার থাকে। ফলে প্রতিবছরই রিহ্যাব মেলায় আসি। এবার ফ্ল্যাট বুকিং দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে।’
মেলায় শীর্ষ নাভানা থেকে শুরু করে শেলটেক, এসিউর, এবিসিসহ বড় কোম্পানির স্টল রয়েছে। ছোট প্রতিষ্ঠানের স্টলও দেখা গেল। বড় কোম্পানির তুলনায় ছোট কোম্পানির ফ্ল্যাটে তুলনামূলক অফার বেশি এবং দামও কম।
মেলায় স্টল ৯৯ নং স্টলে কথা হয় ইসহাক ডেভোলাপার্সের পরিচালক ইন্জিনিয়ার ফরহাত আফজা লুবনার সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে উত্তরা থার্ড ফেজে বেশ কয়েকটি প্রজেক্ট চলমান রয়েছে। মেট্রোরেলের কারণে যাতায়তও খুব সহজ। সাধ্যের মধ্যে যাতে মানুষ ফ্ল্যাট কিনতে পারে সেই বিবেচনা মাথায় নিয়ে ১৪শ স্কয়ার ফিট থেকে ২১শ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট রয়েছে। আর মেলা উপলক্ষ্যে বুকিং দিলে ৫ লাখ পর্যন্ত অফার দিয়েছি। আর আমরা ১৮ মাস থেকে ২ বছরের মধ্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। যথাসময়ে গ্রাহককে ফ্ল্যাটের চাবি বুঝিয়ে দেওয়া এবং মানের বিষয়ে কোনো আপষ আমরা করি না ‘
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) শুরু হওয়া এই মেলা থেকে ফ্ল্যাট ও প্লটের নানা তথ্য জানা যাচ্ছে, দেওয়া যাচ্ছে বুকিংও। পাওয়া যাবে ব্যাংক ঋণের সেবাও। ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা এ মেলায় এবার ২২০টি স্টল অংশ নিয়েছে। এবারের মেলায় বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির পাশাপাশি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও অংশ নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে ঢাকায় রিহ্যাব হাউজিং ফেয়ার শুরু হয়। এটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত রিহ্যাবের ২৬তম মেলা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এইচআই