Monday 23 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির ওপর শুল্ক কমানোর দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:৩১ | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:৩৩

রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বাজারে ভেজাল পণ্যের প্রভাব এবং জনস্বাস্থ্যে এর ক্ষতিকর দিক’ শীর্ষক সেমিনার

ঢাকা: বিভিন্ন প্রকার সস, ভিনেগার, হোয়ায়েটেনিং পাউডার, আইসিং সুগার, চকোলেট সিরাপ, বেবি ফুডসহ ১৭-২০ ধরনের আমদানিকৃত পণ্য নকল ও ভেজাল হচ্ছে বেশি। এর কারণে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতির পাশাপাশি সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এছাড়া দেশের ভাবমূর্তির ক্ষতি, আমদানিকারকদের ব্যবসায়িক লোকসান ও ব্র্যান্ডগুলোর সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বাজারে ভেজাল পণ্যের প্রভাব এবং জনস্বাস্থ্যে এর ক্ষতিকর দিক’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ইআরএফ এবং বাংলাদেশ ফুডস্টাফ ইমপোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স এসোসিয়েশন (বাফিসা) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের (ডিএনসিআরএপি) মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান।

ইআরএফ এর সভাপতি রেফায়েতুল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন বাফিসার সভাপতি মোহাম্মদ বোরহান ই সুলতান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটির সদস্য ড. মোহাম্মদ মোস্তফা, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউটের (বিএসটিআই) সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আরাফাত হোসেনসহ আরও অনেকে।

সেমিনারে বাংলাদেশের বাজারে নকল পণ্য তৈরি ও উৎপন্নের কারণ ও প্রতিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরে বক্তরা বলেন, যখন বাজারে আসল পণ্যের চাহিদা অনুপাতে সরবরাহ কম থাকে অথবা যেটুকু সরবরাহ আছে তার মূল্য খুব বেশি বেড়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায় তখন কিছু অসাধু ব্যক্তি অতি মুনাফার আশায় নকল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে। আর এটি তখনই বেশি হয় যখন আমদানিকৃত পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে পণ্যের বিক্রয়মূল্য অতিরিক্ত বেড়ে যায়। বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের মোড়ক ও প্যাকেট তৈরি করে অসাধু ব্যাক্তিরা এই নকল পণ্য তৈরি করে। এই নকল পণ্য এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি পন্য খেয়ে মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। এছাড়া আমদানি কমে আসায় সরকার প্রতি বছর বিরাট অংকের রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তারা বলেন, বিভিন্ন ধরনের সস, বেবিফুড, ভিনেগার, চকোলেট সিরাপ, অলিভ ওয়েলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য যেগুলো দেশে উৎপাদন হয় না, এমন ২০০ কন্টেইনার পণ্যের চাহিদা রয়েছে বছরে। কিন্তু নকল পণ্য বাংলাদেশে উৎপাদন করার কারণে, এর দশ ভাগের এক ভাগ পণ্যও এখন আমদানি হয় না। এর কারণে সরকার বছরে প্রায় এক হাজার ‘কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

নকল পন্যের কারণে বাংলাদেশের মানুষ মারাত্মক বড় রকমের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। যেমন, মানুষের এখন কিডনি, হার্ট এবং ক্যান্সার জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যার কারণে বিদেশে স্বাস্থ্য চিকিৎসার জন্য প্রচুর ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে।

ডিএনসিআরপির মহাপরিচালক বলেন, ‘দেশের বাজার থেকে নকল ও ভেজাল পণ্য দূরীকরণের জন্য নৈতিক সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এই নৈতিকতার ঘাটতির কারণে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমরা উন্নত দেশ গড়তে পারিনি। অথচ আমাদের পরে স্বাধীন হয়ে অনেক দেশে এগিয়ে গেছে।’

বাফিসার প্রেসিডেন্ট বোরহান ই সুলতান বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে শিল্প গড়ে উঠুক এবং পণ্য তৈরি হোক এটা আমরাও চাই। কিন্তু সেটা মানসম্পন্ন হতে হবে কিন্তু তা হচ্ছে না।’

বাফিসার জেনারেল সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘যে পণ্য আমাদের আমদানি খরচ প্রতিকেজি এক হাজার টাকা বাজারে তা ৩০০-৪০০ টাকায় পাওয়া যায়। আসল পণ্যের তুলনায় নকল পণ্য ৫০ শতাংশ কম দামে বাজারে পাওয়া যায়। কী করে এতো কম দামে বিক্রি হয়? বড় ব্র্যান্ড কোম্পানির অনেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এসে নকল পণ্যের ছড়াছড়ি দেখে বিমুখ হয়ে ফিরে যাচ্ছে।

সারাবাংলা/জিএস/এইচআই

ইআরএফ ডিএনসিআরএপি বাফিসা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর