Tuesday 24 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রংপুর মেডিকেলে রিং বাণিজ্য: ডা. মাহাবুবুরের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:৫৬ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৪৯

রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মাহাবুবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর: ডাক্তার হয়ে হার্টের রিং (স্টেন্ট) বিক্রি করেন, হার্টের রক্তনালীতে একটি রিং পরিয়ে তিনটির টাকা নেন, রক্তনালীতে ব্লক না থাকলেও ব্লক আছে বলে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে আতংকিত করার অভিযোগ উঠেছে আতংকিত করে তোলেন রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের এমন সব লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে রংপুর বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য)-এর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কমিটি গঠনের বিষয়টি জানা যায়।

তদন্ত প্রতিবেদন আগামী সাত কর্ম দিবসের মধ্যে ঢাকাস্থ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক বরাবর পাঠাতে বলা হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয় তদন্ত কমিটি আগামী ৩০ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার সময় বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য)-এর কার্যালয় রংপুরে তদন্ত কাজ পরিচালনা করবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো: হারুন-অর-রশিদকে তদন্ত কমিটির আহবায়ক এবং রংপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জনকে সদস্য সচিব করে এই পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ হলেন- দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, নীলফামারী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং রংপুর জেলার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তত্তাবধায়ক।

এর আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. হরিপদ সরকারকে সভাপতি করে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

‘মৃত্যুভয় দেখিয়ে আতঙ্ক ছড়ান’ ডা. মাহবুবুর, চালান রিং বাণিজ্য (অডিও ফাঁস)

অভিযোগ রয়েছে, গত পাঁচ বছর ধরে হার্টে সার্জারী করে নিজেই রিং বিক্রি করে বসালেও কাডিওলজি বিভাগ এ অনিয়মের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এই তদন্ত কমিটি গঠন করা কয়েক সপ্তাহ হলেও এখনও প্রতিবেদন দিতে পারেনি।

উল্লেখ্য যে, ৭ ডিসেম্বর হাসপাতালের পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন একই হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহিন শাহ্। ডা. শাহিন শাহ’র খালু আফজাল হোসেন (৬৫) ডা. মাহাবুবের অধীনে রিং পরানোর পর মারা যান গত বছরের ৭ নভেম্বর। অন্যদিকে, ডা. মাহাবুবুরের বিরুদ্ধে হার্টের রক্তনালীতে রিং পরিয়ে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় স্বামী লাল মিয়া (৫০) মারা যাওয়ার ৮ নভেম্বর আরেকটি লিখিত অভিযোগ করেন গাইবান্ধা সাঘাটা উপজেলার কচুয়া গুজাপাড়া গ্রামের মোসা: ফরিদা বেগম। ২১ সেপ্টেম্বর ডা. মাহাবুবের প্রতারণার শিকার গঙ্গাচড়ার মাসুমা বেগমের ছেলে মোহা. মশিউর রহমান লিখিত অভিযোগ করেন যে হার্টের রক্তনালীতে ব্লক না থেকেও ব্লক আছে এমন প্রতারণা করার জন্য। ২৩ নভেম্বর গাইবান্ধার ভুক্তভোগী আতোয়ার রহমানও ডা. মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন একটি রিং পরিয়ে তিনটির টাকা নেওয়ার জন্য।

বিজ্ঞাপন

রংপুর দুর্নীতি দমন কমিশন অফিসে ডা. মাহাবুবের প্রতারণার এই চারটি অভিযোগ দুনীতি দমন কমিশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল ঢাকা, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এবং রংপুর সিভিল সার্জন অফিসে ডাকযোগে এবং সরাসরি পাঠিয়ে ডা. মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

তবে যার বিরুদ্ধে এতো এতো অভিযোগ সেই ডা. মাহাবুবুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন গণমাধ্যমে। তার দাবি, তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/এনজে

অভিযোগ ডা. মাহবুবুর রহমান তদন্ত কমিটি রংপুর মেডিকেল কলেজ রিং বাণিজ্য হার্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর