সূর্যের সবচেয়ে কাছে পৌঁছানোর পথে নাসার মিশন
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৩৭ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:০৯
সূর্যের সবচেয়ে কাছে পৌঁছানোর জন্য নাসার পার্কার সোলার প্রোব নতুন ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে। মহাকাশযানটি সূর্যের বাইরের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে চরম তাপমাত্রা ও তীব্র বিকিরণ সহ্য করতে সক্ষম।
এই ঝুঁকিপূর্ণ ফ্লাই-বাইয়ের সময় মহাকাশযানটি কয়েকদিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে। ২৭ ডিসেম্বর একটি সংকেত পাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হতে পারবেন যে এটি বেঁচে আছে কিনা।
২০১৮ সালে উৎক্ষেপিত পার্কার সোলার প্রোব ইতোমধ্যেই সূর্যের চারপাশে ২১ বার প্রদক্ষিণ করেছে। তবে এই ক্রিসমাস ইভের সফরটি হবে সবচেয়ে কাছাকাছি যা সূর্য থেকে মাত্র ৩.৮ মিলিয়ন মাইল (৬.২ মিলিয়ন কিলোমিটার) দূরে।
নাসার বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. নিকোলা ফক্স বলেন, ‘পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব ৯৩ মিলিয়ন মাইল। যদি সূর্য ও পৃথিবীকে এক মিটারের দূরত্বে রাখা হয়, তাহলে পার্কার প্রোব সূর্য থেকে মাত্র চার সেন্টিমিটার দূরে রয়েছে।’
মহাকাশযানটি ১ হাজার ৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং সূর্যের শক্তিশালী বিকিরণের মুখোমুখি হচ্ছে। এটি ১১.৫ সেন্টিমিটার পুরু কার্বন-কম্পোজিট ঢাল দ্বারা সুরক্ষিত। প্রোবটি সূর্যের খুব কাছে গিয়ে দ্রুত ফিরে আসার কৌশল ব্যবহার করছে।
মহাকাশযানটি প্রতি ঘণ্টায় ৪ লাখ ৩০ হাজার মাইল গতিতে ছুটছে, যা লন্ডন থেকে নিউইয়র্কে ৩০ সেকেন্ডেরও কম সময়ে পৌঁছানোর সমান।
ড. জেনিফার মিলার্ড, পঞ্চম স্টার ল্যাবসের একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী, বলেন, ‘করোনা সূর্যের পৃষ্ঠতলের চেয়ে কয়েক মিলিয়ন ডিগ্রি বেশি উত্তপ্ত, অথচ এটি সূর্য থেকে আরও দূরে। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ কী সেটি আমরা এখনো জানি না।’
এছাড়াও, মিশনটি সৌর বায়ু সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা দিতে পারে। সৌর বায়ু পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে মিশে অরোরা সৃষ্টি করে। তবে এটি শক্তি গ্রিড, ইলেকট্রনিক্স এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষতিও করতে পারে।
নাসার ড. ফক্স বলেছেন, ‘সূর্য এবং সৌর বায়ুর কার্যকলাপ বোঝা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এই ক্রিসমাসে নাসার বিজ্ঞানীরা মহাকাশযানটির সংকেতের জন্য উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করছেন। একটি সবুজ হৃদয়ের ইমোজি পাঠানোর মাধ্যমে তারা মিশনের সাফল্যের খবর জানাবেন।
সারাবাংলা/এনজে